বেড়ে চলছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা: দরকার ব্যাপক সচেতনতা
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩, ২২:১৬
বেড়ে চলছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা: দরকার ব্যাপক সচেতনতা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

এ বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেড়েছে। দিন যতই যাচ্ছে, পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ হচ্ছে। আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা- পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এরমধ্যে চলতি জুন মাসের প্রথম ১১ দিনেই হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ জনের ‍মৃত্যু হয়েছে।


সাধারণত দেশে জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। কিন্তু এবার বছরের শুরু থেকেই সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, অশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে মৃত্যু।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর শুধুই বর্ষা মৌসুমের আতঙ্ক নয়। প্রায় সারা বছরই এই সঙ্কট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দিনকে দিন এর ভয়াবহতা বাড়ছে। এটি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে। এছাড়াও থেমে থেমে বৃষ্টি এডিস মশার বংশবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।


১১ জুন, রবিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডেঙ্গু বিষয়ক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নতুন করে আরও ১৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যা চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ রোগীর রেকর্ড। যেখানে নতুন ভর্তি রোগীদের ১৩৬ জনই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। এছাড়া এসময়ে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।


এর আগে গত ১০ জুন, শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৫৬ জন। এসময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৩ হাজার ২১০ জন। বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৬০৩ জন ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৯৭ জন। এছাড়া ঢাকার বাইরে ১০৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২ হাজার ৫৮৪ জন। আর চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৪ জন।


পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় ৬ জনের। ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু, মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও ১১১ জন আক্রান্ত, এপ্রিলে ১৪৩ জনের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু, মে মাসে ১ হাজার ৩৬ জন আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় দুজনের, আর চলতি জুন মাসের প্রথম ১১ দিনেই ১ হাজারের বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৪ বছরের প্রথম ৫ মাসে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি।


ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২০২২ সালে দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা গেছেন। ওই বছর ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।


২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়।


সম্প্রতি সরজমিন রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ডেঙ্গু ওয়ার্ড ঘুরে রোগীর বাড়তি চাপ দেখা যায়। স্বজনরা রোগীদের নিয়ে আসছেন- ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে ভর্তি করছেন। ভালো থাকলে বাড়ি গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন।


হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে ডেঙ্গুর প্রকট বাড়লেও এ বছর আক্রান্তের আভাস ভিন্ন দেখা যাচ্ছে। বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর রোগীর সংখ্যা বেশি। চলতি মে মাসেই চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডের প্রায় বেশিরভাগ সিট রোগীতে ভর্তি। উন্নত চিকিৎসার উদ্দ্যেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বজনরা প্রতিদিন রোগীদের নিয়ে আসছেন।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ রোগীরা মশারির ভেতর শুয়ে আছেন। অনেকে আবার গরমে মশারি খুলে রেখেছেন। তাদের সাথে ভেতরে রোগীর স্বজনরা সেবা করছেন। একজন রোগীর স্বজনের সাথে কথা হয় বিবার্তার। মো. কামরুল ইসলাম রাজধানীর মিরপুরে থাকেন। শুক্রবার রাতে স্ত্রী ফাতেমা বেগমের শারীরিক অবস্থান অবনতি হয়। সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।


তিনি বলেন, কিছু দিন আগে হঠাৎ জ্বর আসে, আবার কমে যায়। কিন্তু দুইদিন আগে বুধবার রাতে অনেক জ্বর আসে, তা আর কমে না। তাই গতকাল হাসপাতালে এসেছি, এখনও তার শরীরে অনেক জ্বর। কিছু খেতে পারছে না, ঘুমাতে পারছে না। শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো না। ডাক্তারা দেখে গেছেন, সবসময় আসছেন।


রাজধানীর খিলগাঁও থেকে ১১ বছর বয়সী মাহবুবুর রহমানকে নিয়ে শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে এসেছেন মা মাহফুজা আক্তার। কথা হয় তার সাথে। তিনি বিবার্তাকে বলেন, মাহবুব দুদিন থেকে জ্বরে ভুগছিল। জ্বরের ওষুধ নাপা খাইয়েছি, তাতেও জ্বর কমছে না। তাই হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে এনেছি। ডাক্তার বলেছেন বাসায় নিয়ে চিকিৎসা করার জন্য, তেমন ভয়ের কিছু নেই। বিশ্রামে থাকতে বলেছেন ও রোগীর পাশে সবসময় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।


হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে বেরিয়ে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেল শুধু মাহবুব না, এই ভয়ংকর রোগের থাবায় হাসপাতালের বেডে আরো অনেকেই ভর্তি আছেন। তেমনি ৭ বছর বয়সী ছোট্ট শিশু শাকিলা ইয়াসমিন। গত পাঁচ দিন থেকে হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি। তার মা নাজমা বেগম বিবার্তাকে বলেন, দুদিন আগেও ১০৩/১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস জ্বর ছিল। শাকিলা কষ্টে শুধু কাঁদছিল, দিনে-রাতে কখনো ঘুমাতে চাইত না। কিছু খেতে পারে না। শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।


তিনি বলেন, কোন মানুষের যাতে ডেঙ্গু না হয়, ডেঙ্গু হলে খুবই কষ্ট। এখন শাকিলার শরীরের অবস্থা একটু ভালো, জ্বর একটু কম। ডাক্তার বলেছেন অন্যান্য শারীরিক জটিলতা কমে গেছে। আর ২-৩ দিনের মধ্য আশা করি আমরা বাসায় যেতে পারব।


মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ডেঙ্গু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. মন্জুরুল হক বিবার্তাকে বলেন বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে আবহাওয়ারও পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন বছরের যে কোন সময় মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। দেশে প্রতিদিন নতুন করে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।


তিনি বলেন, প্রতিদিন জ্বর, ঠাণ্ডাসহ নানা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছে রোগীরা। সবার উপসর্গ দেখে যাদের শারীরিক অবস্থা জটিল তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। আর যাদের শারীরিক অবস্থা আশংকামুক্ত তাদের বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে সবসময় চিকিৎসকরা থাকলেও এত রোগীর খেয়াল রাখা সম্ভব না। যারা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত, তাদের পাশে সবসময় স্বজনদের থাকতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর ওঠানামা করে, তাই খেয়াল রাখতে হবে।


অভিভাবক ও পরিবার একটু সচেতন হলে দ্রুত ডেঙ্গু নামের ভয়াবহ রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। তাই ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে জানান চিকিৎসক ডা. মন্জুরুল হক।


ডেঙ্গু রোগ মোকাবিলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বিবার্তাকে বলেন, মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এর প্রকট বাড়ে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।


তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির পেছনে নাগরিকদেরও দায় আছে। নাগরিকদের সচেতন করার পরেও এ বিষয়ে কেউ তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। যার কারণে ডেঙ্গুর বিস্তার ভয়াবহভাবে বেড়েই চলছে। এছাড়াও এবছর স্বাভাবিক সময়ে বৃষ্টিপাত হয়নি। বৃষ্টি হলেও তা থেমে থেমে হয়েছে। যার ফলে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে রয়েছে। এতে এডিস মশার লার্ভা থেকে মশার জন্ম হচ্ছে।


কবিরুল বাশার বলেন, ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের উচিত সাধারণ মানুষকে সচেতন করাসহ সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালানো এবং তাদের সাথে নিয়ে এই ভয়ংকর রোগের মোকাবিলা করা। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, সারাদেশে রোগী সংখ্যা কম থাকলেও আমরা দেশের সকল হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। গণমাধ্যমসহ সকলকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। জ্বর হলে তারা যেন ডেঙ্গু পরীক্ষা করান।


স্বাস্থ্য ডিজি বলেন, আমরা ক্লিনিক্যালি ডেঙ্গু রোগীদের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অন্য আরও কারণ থাকতে পারে। যা জানার জন্য ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু তা পরিবার অনুমোদন দেয় না। আর এটা সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষায় গুরুত্ব দিতে সকল হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এক্ষেত্রে গত বছরই পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সকল রোগীর জন্য মশারি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন না। চিকিৎসক এলে তারা মশারির ভেতর থাকছেন, বাকি সময়টা বাইরে থাকছেন। রোগীদের মশারির ভেতর রাখার বিষয়ে পুলিশিং ব্যবস্থা আমাদের নেই। এ বিষয়ে রোগীদেরই সচেতন হতে হবে।


বিবার্তা/রিয়াদ/রোমেল

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com