
দেবিদ্বারের হতদরিদ্র পরিবারের ছোট্ট শিশু সৌরভী চক্রবর্তী। হার্ট ও ফুসফুসের রক্তনালীতে ছিদ্র নিয়ে ভুগছিল। অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছিলো না মেয়েটার। এমন খবর পেয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন ইউএসএ-এর সভাপতি ডা. ফেরদৌস খন্দকার। তবে শুধু ফেরদৌস খন্দকারই নয়; তার এসব সেবামূলক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন দেশের চিকিৎসকরাও।
জানা গেছে, গত ১০ মে রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে ডা. ফেরদৌস খন্দকারের সহায়তায় ছোট্ট শিশুটির হার্টে ছিদ্র, ফুসফুসের রক্তনালীতে ছিদ্রের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সুস্থও আছে সৌরভী।
চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাইলে সৌরভীর মামা সন্তোষ চক্রবর্তী বলেন, বছর দুয়েক আগে ভাগনিকে কুমিল্লাতে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। তার হৃৎপিণ্ডে সমস্যা। ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়েছিলেন কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার দেখালে হার্টে ও ফুসফুসের রক্তনালীতে ছিদ্র ধরা পড়ে।
তিনি বলেন, সৌরভীর বাবা একজন রাজমিস্ত্রি। ব্যয়বহুল এ অপারেশন করা তার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। পরে আমরা স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে ডা. ফেরদৌস খন্দকারের সন্ধান পাই। সৌরভীর পরিবারের অবস্থা জানালে তিনি সবসময় পাশে থাকবেন বলে জানান।
সন্তোষ চক্রবর্তী বলেন, বাচ্চাটির কাগজপত্র হোয়াটসঅ্যাপে দেখার পর তিনি বুঝলেন দ্রুত অপারেশন করাতে হবে। তাৎক্ষণিক তিনি শিশুটিকে ঢাকা পাঠাতে বললেন এবং এক সপ্তাহের ভিতরে অপারেশন এর সিদ্ধান্ত নিলেন ডাক্তার। ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে সৌরভীর অপারেশন করা হয়েছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি (ফেরদৌস খন্দকার) সহযোগিতা করেছেন। সেখানে অপারেশনের আগে টাকা জমা নেয়া হয়।
অপারেশন শেষে ডা. আবুল হোসেন সেই টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা আমাদের ফিরিয়ে দেন। টাকা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে ডা. আবুল হোসেন বলেন, ফেরদৌস খন্দকার দূর থেকে করছেন, আমরাও আমাদের পক্ষ থেকে কিছু করি।
এনিয়ে মঙ্গলবার ডা. ফেরদৌস খন্দকার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ভালো মানুষ এখনো আছে, ডাক্তার ভাই স্যালুট আপনাকে। দেবিদ্বারের একজন বঞ্চিত শিশু, হৃৎপিণ্ডে জন্মগত সমস্যার কারণে জীবন যখন প্রায় ব্যাহত, তখন প্রফেসর ডা. আবুল হোসেন স্যারের শরণাপন্ন হই বন্ধুর মাধ্যমে। ওনার সাথে আমার সরাসরি পরিচয় ছিলো না, কিন্তু এই শিশুটির কল্যাণে পরিচয় হল। পুরো ব্যাপারটিতে ওনার সহায়তা কামনা করি, উনি এক বাক্যে রাজি হয়ে যান। কিন্তু অবাক করা কাণ্ড এত বড় একটি অপারেশনের পরে উনি রুগির হাতে নিজে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বললেন, ‘ডা. ফেরদৌস বহুদূর থেকে অনেক কিছু করেছেন, আমি না হয় আমারটুকু করলাম।’ অপারেশনের নিজের পুরো ফি তিনি নিজ হাতে রুগীর পরিবারকে দিয়ে দিলেন। আমার সত্যিই জানা ছিলো না যে, এমন মানুষও আছে!
ভালো মানুষ এখনো আছে। কৃতজ্ঞ স্যার আপনার কাছে। আপনার সহায়তা সারা জীবন মনে রাখবে এই পরিবারটির, দেবিদ্বারবাসী এবং আমি। আপনার মতো মানুষরা আছে বলেই, সমাজ এখনও ঠিক পথেই আছে। ভালো থাকুন।
বি.দ্র.- অপারেশন সফল হয়েছে, ১০ দিন পর বাড়ি যাবে আশা করছি।
বিবার্তা/সোহেল/রোমেল/এসএফ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]