
দেশে শুরু হয়েছে আমান ধান কাটা। মোকামে আমন ধান আসতে শুরু করলেও চালের বাজারে খুব একটা প্রভাব নেই। শুধু তা-ই নয়, সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েও পণ্যটির দাম কমিয়ে আনতে পারছে না। বাজারে সবচেয়ে নিম্নমানের মোটা চালও বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি। একইসঙ্গে গরীব-মধ্যবিত্তের আলুর দামও চালের দাম ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। গত সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা। শাক-সবজিতেও নেই স্বস্তির সুখবর।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত শুক্রবারও বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা মঙ্গল-বুধবার এসে ৫ টাকা এবং গতকাল আরও ৫ টাকা বেড়েছে। ফলে সপ্তাহের মধ্যে আলুর কেজি ১০ টাকা বেড়েছে।
অন্যদিকে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি। এ ছাড়া স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৫৮ টাকা কেজি, যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। পাইজাম ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৬২ টাকা কেজি ছিল। তবে জিরানাজির জাতের চালগুলো আগের দাম ৬৮-৭০ টাকায় স্থির রয়েছে।
খুচরায় দেশীয় বাসমতীর কেজি ৯০-৯৫, কাটারি (সেদ্ধ) ও কাটারি নাজির ৭২-৭৮, বিভিন্ন ধরনের জিরাশাইল (মিনিকেট) ৬৫-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিআর আঠারো, উনত্রিশসহ মাঝারি মানের চালগুলো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা বলছেন, এগুলোর দাম আগের অবস্থানেই রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমন মৌসুমে সাধারণত পাইজাম, গুটিস্বর্ণা, কাজললতা, জিরানাজির ও কিছু মোটা চালের উৎপাদন হয়। মৌসুম শুরু হলে এসবের সরবরাহ বেড়ে দাম কিছুটা কমে। ইতিমধ্যে কয়েক ধরনের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। এগুলোর দাম কিছুটা কমলেও আশানুরূপ নয়।
এছাড়া অন্য বাজারেও ডিম, গরু, খাসির মাংস ও মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও আগের সেই বাড়তি দামেই আটকে আছে সব ধরনের মাছ।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়, সোনালির কেজি ২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০০, কক ৩০০ টাকা কেজি। পাশাপাশি দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বাজার ভেদে ৭৫০ টাকা থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
তবে বাজারে সব ধরনের মাছ বাড়তি দামেই আটকে আছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়, পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঁতল ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা, গলদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, রুপচাঁদা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, লতি ৭০ টাকা, কহি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা ও পটোল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, শালগম ১২০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৭০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৫০-৬০ টাকা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা।
বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০-১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০-৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০-১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেল। খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা ও খোলা পাম তেল ১৬২-১৬৩ টাকায় বিক্রি হয়। এক মাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ১৬-১৭ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বেড়েছে।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]