সবজি-ডিমে ফিরল কিছুটা স্বস্তি, হাতছাড়া মুরগি
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৯
সবজি-ডিমে ফিরল কিছুটা স্বস্তি, হাতছাড়া মুরগি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ আলোচনায় ছিল ডিম। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তবে এ দাম এখন বড়বাজারে ১৫০ টাকায় নেমেছে। যদিও পাড়া-মহল্লায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো ডিম বিক্রি করছেন ১৬০ টাকায়।


সরকার এরমধ্যে ডিমের শুল্কছাড়, আমদানির অনুমতি এবং বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। যার সুফল মিলছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।


ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত অভিযান এবং খামারি ও করপোরেটদের ডিম সরবরাহ বাড়ানোর কারণে দাম কমে আসছে। তাছাড়া শুল্কছাড়ের সঙ্গে সরকার নতুন করে আরও সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিচ্ছে। এটিও দাম কমার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।


এদিকে, ডিমের দাম কমলেও এবার অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে মুরগির দাম। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বাড়তে দেখা গেছে। এ মুরগির দাম আগের সপ্তাহেও বেড়েছিল। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ থেকে ২১৫ টাকা পর্যন্ত। যা দুই সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকার মধ্যে ছিল।


অন্যদিকে অস্বাভাবিকভাবে সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৫০ টাকা বেড়ে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০-২৮০ টাকা ছিল।


অন্যদিকে বাজারে কিছুটা কমেছে কাঁচামরিচের ঝাল। পাশাপাশি সামান্য কমলেও সবজির দাম এখনো সাধারণ মানুষের স্বস্তির মধ্যে আসেনি।


রামপুরা বাজারে মুরগির বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, হুট করেই সরবরাহ কমিয়ে মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পাইকাররা। ওরা (পাইকারি বিক্রেতারা) জানিয়েছে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে মুরগির সরবরাহ কম।


ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সরবরাহ ঠিক থাকলে খুব শিগগির দাম আরও কমে আসবে।


ক্রেতারা বলছেন, বাজারে মাছ-মুরগির দাম আগে থেকে লাগামহীন। এখনও প্রতি ডজন ডিমে গুনতে হচ্ছে দেড়শ টাকার বেশি। প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর পণ্যটিও এখন নাগালের বাইরে; আমিষের তো কথাই নেই।


মো. হোসেন আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, মাছ-মাংস কিনতে গেলে মাস চালানো সম্ভব হয়না। এখন ডিমের দামও চড়া। এতে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।


বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে কমেছে মুরগির সরবরাহ। তাছাড়া, মুরগির ফিড ও বাচ্চার দাম বাড়ায় ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদনব্যবস্থা, যার প্রভাব পড়ছে বাজারেও।


কারওয়ান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম জানান, এখন আর আগের মতো মুরগি আসছে না। সেই সঙ্গে পাইকারিতে দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও।


এদিকে মাসখানেক ধরে উত্তাপ ছড়ানো সবজির বাজারও রয়েছে কমতির দিকে। যদিও এখনকার দাম সাধারণ ক্রেতাদের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। বাজারে শুধু কমদামের সবজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এরপর রয়েছে পটোল, যার দাম কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। এছাড়া ঢ্যাঁড়শ ৮০-৯০, বরবটি ১০০-১২০, গোল বেগুন ১৩০-১৪০, লম্বা বেগুন ১০০-১২০, টমেটো ১৮০-১৯০, ধুন্দল, ঝিঙ্গে ও চিচিঙ্গা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


সপ্তাহজুড়ে তেজ ছড়ানো কাঁচামরিচের বাজারও নামতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। যদিও এখনো কিছু কিছু খুচরা দোকানি এখনো প্রতি একপোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা হাঁকছেন। তারা ১০০ গ্রাম বিক্রি করছেন ৪০ টাকায়।


এদিকে চলতি সপ্তাহে তেল ও চিনিতেও শুল্কছাড় দিয়েছে নতুন সরকার। কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শুল্ক কমানোর খবরে পাইকাররা তেল ও চিনির দরে কিছুটা ছাড় দিচ্ছে। তবে ভোক্তারা শুল্কছাড়ের সুফল পেতে কিছু দিন সময় লাগবে। চিনির দর নতুন করে বাড়েনি। বরং এক সপ্তাহে পাইকারিতে বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০-২০০ টাকার মতো কমেছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে এসব পণ্যের খুচরা দাম কমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com