এবারও লোকসানের শঙ্কায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৩, ০১:১৪
এবারও লোকসানের শঙ্কায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

এবারও পশুর চামড়ার দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন বিক্রেতা তথা চামড়া সংগ্রহ করা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ করছেন তারা। এমনকি কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কাও তাদের। অন্যদিকে ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা বলছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই তারা কাঁচা চামড়া কিনছেন।


ঈদের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় মাদরাসা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি বাড়ি ঘুরে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেন। তবে যে দামে তারা চামড়া সংগ্রহ করছেন সে দামেও তা কিনছে না লালবাগ পোস্তার কাঁচা চামড়ার আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা।


বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিশনের দাবি, কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ে অভিযোগ থাকলেও লবণ দেওয়া চামড়া কেনাবেচা হবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে। বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় এ বছর ৫ থেকে ১০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।


বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পশুর চামড়ার দাম অনুসন্ধানে এমন চিত্র দেখা গেছে।


এদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করা পশুর কাঁচা চামড়া বিক্রি জন্য রাজধানীর সায়েন্সল্যাবের সড়কে নিয়ে আসেন এতিমখানার কর্মীরা। একটু বাড়তি দামের আশায় ক্রেতার কাছে নিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ার কথা জানান তারা।


এবছর বড় আকারের গরুর কাঁচা চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়, মাঝারি গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সায়েন্সল্যাব এলাকার চামড়া ক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে এবার বিঘ্নিত হচ্ছে বেচাকেনা। বৃষ্টিতে চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় দাম কিছুটা কম যাচ্ছে।


কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও। তাদের অভিযোগ, লাভের আশায় মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে যে টাকায় তারা চামড়া সংগ্রহ করেছেন এখন বিক্রি করে তাদের পরিবহন খরচই উঠছে না।


গরুর চামড়া কম বা বেশি দামে যদিওবা কিনছেন ট্যানারি মালিকরা, কিন্তু ছাগলের চামড়ার একেবারেই চাহিদা নেই। বিক্রি করতে না পেয়ে অনেক বিক্রেতাকে ফেলে রেখে যেতে দেখা যায়।


এদিকে কাঁচা চামড়ার বর্তমান দামকে প্রকৃত বাজার দর বলতে নারাজ ট্যানারি মালিকরা। তাদের পাল্টা অভিযোগ, সায়েন্সল্যাব, লালবাগ পোস্তাসহ রাজধানীতে বসা অস্থায়ী চামড়া বাজারে কেনাবেচা করতে দিচ্ছে না প্রশাসন।


বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় এবছর ৫ থেকে ১০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তারপরও সঠিক দাম দিয়ে চামড়া কেনা হচ্ছে।


জাতীয় সম্পদ বিবেচনায় রাত ১০টার মধ্যে কোরবানির পশুর চামড়া লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করার আহ্বান জানিয়েছে ট্যানারি মালিকরা। ঈদের চারদিন আগেই কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার।


ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, গত বছর এ দাম ছিল ৪৭ থেকে ৫২ টাকা। ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, যা গত বছর ছিল ৪০ থেকে ৪৪ টাকা।


সে হিসাবে গত বছরের চেয়ে এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুটে ৩ টাকা এবং ঢাকার বাইরে বেড়েছে ৪ টাকা।


এছাড়া সারাদেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া গত বছরের মতই প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com