‘সরকারের বিরোধিতা করেছি, তাই কাজ না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে’
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫
‘সরকারের বিরোধিতা করেছি, তাই কাজ না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে’
বিনোদন ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আনন্দবাজার পত্রিকায় লিখেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র :


ছবি হাতছাড়া হচ্ছে প্রায়শই। কিংবা কোনও রিয়্যালিটি শো থেকে বাদ পড়ে গেলাম। বিজ্ঞাপনী ছবির জন্য নির্বাচিত হয়েও শেষে আর কাজ হলো না। অভিযোগের তালিকা লম্বা। কিছু জানিয়েছি সামাজিক মাধ্যমে। অনেক কিছুই আবার জানাইনি। জানিয়ে লাভ নেই, তাই। তবুও আবারও আমি সরব।


আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে অনেকের অনেক বক্তব্য। প্রায় রোজই কেউ কিছু না কিছু বলছেন। আমি একটু বেশিই জোরালো প্রতিবাদ করেছি। অবশেষে তার ফলাফল পেলাম। দুই দুইটা বিজ্ঞাপনের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। ক্লায়েন্ট যোগাযোগ করেছিলেন এজেন্সির সঙ্গে। এজেন্সির যিনি প্রতিনিধি তিনি আমাকে পছন্দ করেন। চেয়েছিলেন, কাজটা আমিই করি। কিন্তু তারও তো কোথাও বাধা রয়েছে।


বললেন, ‘দিদি, আরজি কর-কাণ্ডে তোমার বক্তব্য তাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে। তুমি সরকারের বিরোধিতা করেছো। তোমাকে দিয়ে কাজ না করানোর নির্দেশ এসেছে।’ দুটো কাজ থেকেই ভালো অঙ্কের পারিশ্রমিক পেতাম।


আমি আর এই ধরনের ঘটনায় বিচলিত হই না। কখনোই মধু মাখিয়ে কথা বলতে পারি না। বাকিরা যতটা না মনের গভীর থেকে মৃত চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন, আমার চাওয়া ছিল আরও গভীর।


আমার বক্তব্য ছিল পুলিশমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বাংলায় এই দুই পদেই মুখ্যমন্ত্রী আসীন। তাহলে কাকে বলব? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই মুখ খুলতে হবে। সেটাই করেছি।


ভয় না পাওয়ার আরও একটা কারণ, আমার মাথার উপরে কোনও দায় নেই। ঋণের বোঝা নেই। প্রচুর চাহিদা নেই। দামি গাড়ি, দামি বাড়ি, দামি পোশাকের বিলাসিতা নেই। ফলে, প্রচুর অর্থের প্রয়োজনও নেই।


একইভাবে, যতটা সম্ভব সৎ থেকে কাজ করা যায় ততটাই সৎ আমি। একমাত্র দেওয়ালে পিঠ ঠেকে না গেলে মিথ্যা কথা বলি না। বললেও এমন মিথ্যে বলি না যা অপরের ক্ষতি করবে। বরাবর নিজের কাজ নিজেই জোগাড় করে এসেছি। কোনওদিন তথাকথিত ‘সুগার ড্যাডি’ নেই। ভালবাসার মানুষজনেরও বড়ই অভাব। সব মিলিয়ে নিজেই নিজের হর্তা-কর্তা-বিধাতা। ফলে, যা-ই ঘটুক ঠিক চালিয়ে নেব।


আজ আমি পরিচালক হলে এমন অভিনেতা বাছাই করতাম যিনি আক্ষরিক অর্থেই সৎ ব্যক্তি। তা হলেই আমার বিজ্ঞাপন বেশি বিশ্বাসযোগ্য হত। কারণ, জনতা সেই বিশ্বাসযোগ্য মুখ দেখে জিনিস কেনার ভরসা পেত।


আমার মতো করে তো সবাই ভাববেন না। অনেকে বলেন, এত বিতর্ক, এত বিরোধিতা যখন, তখন একটু কম কথা বললেই তো হয়। আমি পারব না। এই বয়সে এসে নিজেকে বদলানো সম্ভব নয়। তাছাড়া, মাথা নোয়াতে শিখিনি। তাই আমার মতো করেই চলব।


এককালে খুব কম উপার্জন করিনি। সেগুলো উড়িয়ে নষ্ট করিনি। আমার চলে যাবে। বরং এই ধরনের ঘটনা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। বুঝতে পারি, আমিই সঠিক। ঠিক পথে হাঁটছি বলেই আমাকে ঘিরে এত কথা।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com