
বিদেশে বসে লাল-নীল পাসপোর্ট নিয়ে অনেক কথা বলা যায়। চোর–বাটপারে দেশটা ভরে গেছে? দেশের কী হবে? দেশের মানুষদের কী হবে? দেশের শিল্পীসমাজ কিছুই করছে না? ফেসবুক লাইভে এসে কত কথা... ভাই ও বোনেরা, সবুজ পাসপোর্টটা নেন...লাল–নীল পাসপোর্টটা ছাড়েন...তারপরে লম্বা লম্বা কথা বইলেন।’
ফেসবুকে সোমবার ( ২ সেপ্টেম্বর) সকালে এমন একটি পোস্ট দিয়েছেন অভিনয়শিল্পী তাহমিনা সুলতানা মৌ। হঠাৎ এমন পোস্টের কারণ কী জানতে যোগাযোগ করা হয় তাঁর সঙ্গে।
মৌ জানান, ‘যাঁরা প্রবাসে আছেন, সেখানকার পাসপোর্ট হোল্ডার, তাঁদের কথা বলছি, তাঁদের যেন হাহুতাশের শেষ নাই। কথায় কথায়, দেশ শেষ হয়ে গেল। আমরা দেশের এমন অবস্থা দেখে মরে যাচ্ছি। কী হবে আমার দেশের। বন্যাকবলিত মানুষের কী হবে—কথা হচ্ছে এই পাসপোর্টধারীরা কয় টাকার ডলার পাঠিয়েছেন। রেমিট্যান্স–যোদ্ধারা কিন্তু পাঠাচ্ছেন, তাঁদের কথা আলাদা। আমি যেসব পাসপোর্ট হোল্ডারদের চিনি, তাঁরা হয়তো বছরে একবার আসেন বা পাঁচ বছরে একবার আসেন মা–বাবাকে দেখতে। অনেক সময় মা–বাবা মারা গেলেও তা–ও আসেন না। অথচ ওখানে বসে হাহুতাশ করেই যাচ্ছেন। তারপর আমাদেরই কিছু সহকর্মী, যাঁরা দেশের বাইরে স্থায়ী হয়েছেন, তাঁরা খোঁচায়ে খোঁচায়ে “ওই শিল্পী কিছু বলল না, অমুক শিল্পীও দেখছি কিছুই বলল না, ওই শিল্পীর কোনো ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখলাম, মন্তব্যও দেখছি করল না”—এমনটা বলেই যান!’
মৌ জানান, অন্য পেশাতেও পরিচিত অনেকে আছেন, তাঁদের নিয়ে কেউ কিছু বলছে না। সব আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু যেন শিল্পীরা।
মৌ বলেন, ‘আমাদের নাম ধরেই কেন বলতে হবে, “তিনি এই করছেন না, সেই করছেন না। আরে আপনি দেখি প্রোফাইলটা লাল করলেন না, লাল করলে ওহ আচ্ছা, আগে তো করেননি, এখন কেন করলেন। এগুলো সব বিদেশে বসে বসে করছেন। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ভাবতে হচ্ছে, তাঁরা সবাই আমাদেরই সহকর্মী।’
নতুন করে এ আলোচনার শুরুটা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলনকে ঘিরে, এমটাই জানান তাহমিনা মৌ। এই আয়োজনে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকজন শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে তাহমিনা মৌ বললেন, ‘সেখানে অনুষ্ঠানে যাঁরা গেছেন, তাঁদের নিয়ে কেউ বলতে শুরু করেছেন, “বাংলাদেশে শিল্পীদের কাজ নাই, সেখানে গেছে নাচ করতে, গাইতে, টাকা কামাইতে।” আরে অনুষ্ঠান কি শিল্পীরা আয়োজন করছে! এটা তো আয়োজকেরা করেছেন, বললে তাঁদের বলেন। শিল্পীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, শিল্পী পেশাদারি কাজ করবে।’
২৫ বছর ধরে অভিনয় করছেন তাহমিনা সুলতানা মৌ। চলচ্চিত্র ছাড়া অভিনয়ের সব মাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। তবে প্রস্তাব পাননি যে তা নয়, কিন্তু আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতি থাকায় নিজের চলচ্চিত্রযাত্রা ওই সময়টায় করেননি। ২০২৪ সালে এসে পেয়েছেন আস্থা ও নির্ভরতা, তাই তো সোহেল আরমানের সিনেমা ‘সংবাদ’ দিয়ে এত বছরের ঘাটতিও পূরণ হয়েছে তাঁর।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]