চুরির অভিযোগে কুবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:০২
চুরির অভিযোগে কুবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ
কুবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আনাস আহমেদকে ক্যামেরার লেন্স চুরির অভিযোগে পুলিশে সোপর্দ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান।


জানা যায়, আনাস ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম ভুঁইয়া কুমিল্লা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়। সেখান থেকে ফটোগ্রাফার রাব্বি এলাহীর একটি ক্যামেরা লেন্স চুরি হলে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের সন্দেহ করা হয়। রাব্বি কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে রাব্বি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সামনে আনাসকে মারধর করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অর্ধ-উলঙ্গ করে স্বীকারোক্তি আদায় করে, যা মোবাইলে ধারণ করে। পরে শিক্ষার্থীরা উভয় পক্ষকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে।


কোটবাড়ি ফাঁড়ি ও প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছিল, কিন্তু ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। এরমধ্যে রাব্বির পরিচিত সেনাকর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ক্যাপ্টেন পলাশ (আসল নাম শাহীন, কর্মস্থল বগুড়া সেনানিবাস) বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়। তবে পুলিশ প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।


পরবর্তীতে কুমিল্লা জেলা পুলিশের এএসপি মোস্তাইন বিল্লাহ ফেরদৌস এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন। রাব্বি ও তার দুই সহযোগীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় আনাসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরি হওয়া ক্যামেরা লেন্স উদ্ধার করে এবং আনাস চুরির কথা স্বীকার করে।


এনিয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান রাহিম বলেন, "গতকাল বহিরাগত কয়েকজন এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে মারধর করে এবং একটি মবের সৃষ্টি করে। পরে শিক্ষার্থীরা পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় পক্ষকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। বিষয়টি যখন সমাধানের পথে ছিল, তখন ফেসবুকে অভিযুক্ত আনাসের একটি অর্ধনগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর উপস্থিত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় অভিযুক্তদের নিরাপদে বের করে দিই। আজ সকালে হারিয়ে যাওয়া লেন্স উদ্ধার করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসাথে আনাসকেও পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।"


লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মু. ওসমান গনি বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কখনোই একজন চোরের পক্ষে ছিলাম না, ভবিষ্যতেও থাকবো না। আজ তিনি (আনাস) স্বীকার করেছেন যে তিনি এবং তার বন্ধু শামীম চুরির সাথে জড়িত ছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ তাকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। আমাদের দাবি, চুরির সাথে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে।"


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, 'আমরা চাই না যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী চুরির মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকুক। যেহেতু অভিযুক্তদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তাই আমরা আগামীকাল শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করব। এরপর ২৮ তারিখ সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"


কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, 'বাদী পক্ষ যদি কোনো ধরনের অভিযোগ করেন তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। অভিযুক্ত এখনো থানা হেফাজতে রয়েছে।"


বিবার্তা/প্রসেনজিত/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com