
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস কে শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখা থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেছেন সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম।
উপাচার্যকে অব্যাহতির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১০(২) অনুযায়ী খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত উপাচার্য পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
অন্যদিকে উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১২(২) অনুযায়ী উপ-উপাচার্য পদে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত উপ-উপাচার্য পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
এর আগে বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিনগত রাত ১টার দিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুয়েটে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে।
পরদিন বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তারা জানান, কুয়েটের উপাচার্য ও উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতি ও আচার্য তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলে সেখানে নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে।
তবে ওইদিন কুয়েটের উপ-উপাচার্য দাবি করেন, তিনি পদত্যাগ করেননি। উল্টো তাকে অব্যাহতি না দিতে তিনি শিক্ষা উপদেষ্টাকে চিঠি লেখেন। তাতে তিনি নিজেকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করেন। তবে তাতেও তার শেষরক্ষা হয়নি। কুয়েট উপাচার্যের সঙ্গে উপ-উপাচার্যকেও বিদায় নিতে হলো।
জানা যায়, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এসব ঘটনায় কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অপসারণের এক দফা দাবিতে ২২ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে আমরণ অনশনে বসেন আন্দোলনরত ২৯ শিক্ষার্থী। বুধবার রাতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানানো হলে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। পরদিন বৃহস্পতিবার তারা ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করেন।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]