৯ দফা দাবিতে চবির ৬ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩২
৯ দফা দাবিতে চবির ৬ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
চবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পোষ্যকোটা বাতিল, জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরণ অনশন শুরু করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী।


বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছে তারা।


অনশনে বসা ৬ শিক্ষার্থী হলো জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন, কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, চবি সমন্বয়ক রশিদ দিনার। তানিম মুশফিক, রিয়াদ ও সাইরিব রহমান সুপ্ত।


তবে অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।


কর্মসূচিতে অনশনরত জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো বাংলা বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন বলেন, পোষ্যকোটা সম্পূর্ণ একটি অযৌক্তিক কোটা। এ কোটার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখনও কাতরাচ্ছে। কিন্তু হত্যাকারীদের কোন উল্লেখযোগ্য বিচার হয়নি। ৯ দফা দাবিতে আমরা অনশন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, শহীদ হৃদয় তরুয়া এবং শহীদ ফরহাদের রক্তের উপর বসে আছে প্রশাসন তাদের কাছে খুনিদের বিচার চাইতে হচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা হত্যা হামলার সাথে জড়িত তারা বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা দিচ্ছে। এসব হামলাকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ৫৭ জনকে বহিষ্কার করেছে সেখানে চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন সিদ্ধান্ত নেই। চবির সকল শিক্ষার্থী পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে থাকার পরেও পোষ্য কোটা এখনো বহাল রয়েছে। আমরা কোন ধরনের কোটা আর দেখতে চাই না।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের এসব দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করছি। শিক্ষার্থীরা যে এভাবে অনশন করছে সেটা আমাদের জন্য ব্যর্থতা। আমরা সবাই মিলে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারি। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান হামলার সাথে জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের স্থান মাটিতে নয় তোমাদের স্থান আমাদের বুকে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে আলোচনায় আসার আহ্বান জানান এবং জুলাইয়ে অপরাধীদের বিচারের জন্য এক সপ্তাহ সময়ের আশ্বাস দেন।


উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, যারা আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুলাই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীরা এমন কেউ যদি পড়াশোনা শেষ করে চলে যায় তবুও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যেমন সার্টিফিকেট দিতে পারে তেমনি আবার সার্টিফিকেট বাতিলও করতে পারে।


তিনি আরো বলেন, আমি কোন প্রকার কোটার পক্ষে নেই। আমরাও চাই যাতে কোন প্রকার কোটা না থাকে। তবে সমস্ত কিছুর একটা প্রক্রিয়া আছে আমাদের তোমরা সময় দাও আমরা সকল সমস্যার সমাধান করবো।


এর আগে কয়েকদিন ধরেই ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ২০০ টাকা করতে হবে, মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা, পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করতে হবে, বন্ধ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা, বাড়ির দূরত্ব এবং মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ ও অতিদ্রুত নতুন দুইটি হল নির্মাণ করতে হবে, ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল এক্সট্রা কারিকুলার সংগঠনসমূহকে অফিস বরাদ্দ দিতে হবে, অনতিবিলম্বে টিএসসি নির্মাণ করতে হবে, অতি দ্রুত চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইনভিত্তিক করতে হবে এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্তহামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।


বিবার্তা/মহসিন/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com