বাকৃবিতে হাওরাঞ্চলে ‘সোলার পাম্পের সম্ভাবনা’ নিয়ে কর্মশালা
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৪
বাকৃবিতে হাওরাঞ্চলে ‘সোলার পাম্পের সম্ভাবনা’ নিয়ে কর্মশালা
বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকবি) ‘সেচ ব্যবস্থায় জলবায়ু-স্মার্ট সোলার পাম্পের সম্ভাবনা উন্মুক্ত করে অফ-গ্রিডের মাধ্যমে হাওরে বোরো ধানের সেচযুক্ত এলাকা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক গবেষণা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


২৩ ডিসেম্বর, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদীয় সম্মেলন কক্ষে ওই কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়।


কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক।


বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহকারী প্রতিনিধি ড. ইমানুন নবি খান, বাকৃবির উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. সামছুল আলম এবং বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. এম. হাম্মাদুর রহমান।


কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও বাকৃবির সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি হাওর এলাকায় সোলার সেচ পাম্পের গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোকপাত করেন।


তিনি জানান, বাংলাদেশের সেচ-নির্ভর কৃষিকাজে ধান উৎপাদন সর্বাধিক প্রাধান্য পায়। এক্ষেত্রে প্রায় ১৭ লাখ সেচ পাম্প ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে ৮৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ শ্যালো টিউবওয়েল, ২ দশমিক ০৯ শতাংশ গভীর টিউবওয়েল এবং ৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ লো লিফট পাম্প। সেচ পাম্পগুলোর ৭৪ শতাংশ ডিজেলচালিত এবং অবশিষ্ট অংশ বিদ্যুৎচালিত।


সরকারি নীতি অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের মোট শক্তির ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় কৃষি নীতিতেও বিদ্যমান ডিজেলচালিত সেচ পাম্পগুলোকে সোলার সেচ পাম্পে রূপান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে মাত্র ৪ হাজার ৫২৩টি সোলার সেচ পাম্প স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে, যা দেশের মোট সেচকৃত জমির (৫.৬৫ মিলিয়ন হেক্টর) মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ এলাকা। এসব সোলার পাম্পের বেশিরভাগই দেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। তবে, হাওর অঞ্চলে এই প্রযুক্তির প্রয়োগ খুবই কম দেখা যায়। অথচ দেশে উৎপাদিত ধানের ১৮ শতাংশ হাওর এলাকায় উৎপাদিত হয়। তাই বিদ্যুৎ বিহীন (অফ-গ্রিড) হাওর অঞ্চলে বোরো ধান চাষাবাদের জন্য সেচের কাজে সোলার সেচ পাম্প অনেক উপকারী হতে পারে। কেননা বোরো মৌসুমে হাওর শুষ্ক থাকে।


প্রকল্পের গবেষক দলে আরও যুক্ত আছেন বাকৃবির সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম আদম, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. রমিজ উদ্দীন এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ বি এম জাহিদ হোসেন। দুই বছর মেয়াদী প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, হাওর এলাকার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। আমি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই এই প্রকল্পে অর্থায়ন করার জন্য। এই প্রকল্পটি দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে, এমন প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার বিষয়েও নজরে রাখতে হবে। সোলার সেচ পাম্প শুধু বোরো মৌসুমের জন্য নয়, সারা বছরই কাজে লাগানো সম্ভব হলে খরচ সংকুলান হবে বলে আমি মনে করি।


বিবার্তা/আমানুল্লাহ/এনএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com