ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক নবীন শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ করে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। পরে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিষয়টি ঘরোয়াভাবে সমাধান করায় প্রশাসনের কাছে কোন অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষাবর্ষের মুদাচ্ছির খান কাফী ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ সাগর। অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। এছাড়া কাফি ফেনী’র পরশুরাম উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। ভুক্তভোগী আল- ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী। এদিকে শাখা ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, “কারো ব্যক্তিগত কাজের দায় ছাত্রলীগের না। আর আমি ঘটনা শুনেই তার জন্য একটি সিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা সবসময়ই ভুক্তভোগীর পাশে আছি।”
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে ভুক্তভোগীকে ডাকেন অভিযুক্ত কাফি ও সাগর। এসময় তাকে উলঙ্গ করে ব্রেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখেন অভিযুক্তরা। এছাড়া ভুক্তভোগীকে রড দিয়ে আঘাত করেন ও নাকে খত দেওয়ান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী জানান, “ঘটনার পরদিন দুপুরে জিয়া মোড়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছে অভিযুক্তদের নিয়ে আসেন শাখা ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদী হাসান হাফিজ ও নাসিম আহমেদ মাসুম। এসময় অভিযুক্তদের চড় থাপ্পড় মারেন হাফিজ। এছাড়াও তার নির্দেশে ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চান অভিযুক্তরা।”
এছাড়া রাতে লালন শাহ হলে আবারো অভিযুক্তদের নিয়ে বসেন শাখা ছাত্রলীগ কর্মী শাহিন আলম, মাসুম ও লিখন। এসময় অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর মাঝে সমঝোতা করে দেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ কর্মী শাহীন আলম বলেন, “সিনিয়র ও জুনিয়রের মধ্যে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমরা বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাগরকে সাংবাদিকদের বলেন, “এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি। আমি সেদিন হলের বাইরে ছিলাম।” এদিকে কথার একপর্যায়ে আবার তিনি বলেন, “আমি সেদিন আমার পাশের রুমে ছিলাম।” এদিকে আরেক অভিযুক্ত কাফি’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে লালন ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুনে লালন শাহ হলের একই রুমে এক নবীন শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল ভুক্তভোগী। তবে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে ঘরোয়াভাবে মীমাংসা হওয়ায় অভিযোগ তুলে নেয় ভুক্তভোগী ওই ছাত্র।
বিবার্তা/জায়িম/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]