‘জীবনে কোনোদিন কোন পদকের জন্য বলিনি’
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৭
‘জীবনে কোনোদিন কোন পদকের জন্য বলিনি’
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর সম্প্রতি ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডি.লিট’ ডিগ্রি অর্জন করেন, এছাড়াও তিনি ‘দীনেশ-রবীন্দ্রপত্র’ এবং ‘ঋষিজ’ পদকে ভূষিত হওয়ায় তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।


২৩ জানুয়ারি, মঙ্গলবার সকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।


অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ৫ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের উপস্থিতিতে কেক কাটার মাধ্যমে বিভাগটির পাঁচ বৎসর পূর্তি উদ্‌যাপন করা হয়। এরপর বিভাগের সদ্য যোগদানকৃত নবীন শিক্ষকদের বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা।


পদকপ্রপ্তি উপলক্ষ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করায় উপাচার্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সকলকে ধন্যবাদ জানান। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এই যে দীনেশ-রবীন্দ্রপত্র বা ঋষিজ পদক যাই বলেন না কেন কোনোদিন কোন পদকের জন্য বলিনি। এবার বাংলা একাডেমির জন্য সিভি চেয়েছিল। আমি বলেছি, ‘নো। সিভি দিতে পারবো না।’ পদকের জন্য তদবির করা আমার জীবনে নেই। বাংলা একাডেমি পদক যদি না পাই তাহলে কী এমন হবে। কিছুই না। এর জন্য তদবির করা দশজন মানুষকে বলা এটি আমি পারবো না। আমার কাজ হচ্ছে গবেষণা করা। আমি সেটাই করে যাবো। তাই ছাত্রছাত্রীদের বলবো যে, তুমি তোমার বিদ্যাটাতে শতভাগ উত্তীর্ণ হও। আমাদের মাস্টার হতে হবে। এই মাস্টার হচ্ছে দক্ষতা।


তিনি বলেন, এই যুগের সবচাইতে বড় সংকট হচ্ছে দক্ষ মানুষ নেই আমাদের। প্রচুর মানুষ আছে কিন্তু দক্ষ মানুষ নেই। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন আমি জনতা দেখি মানুষ দেখি না। জনতা ও মানুষের মধ্যে যে পার্থক্য আছে সেটি এই কথাটিতেই স্পষ্ট। ওইরকম জনতা হওয়ার কোনো দরকার নেই। আমাদের মানুষ হতে হবে।


সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি উপাচার্য বলেন, সমাজবিজ্ঞান থেকে পরবর্তীতে বহু বিভাগের জন্ম হয়েছে। বহুবিদ্যার প্রসূতি সমাজবিজ্ঞান। বিভাগ হিসেবেও বটে, স্টাডি হিসেবেও বটে। পপুলেশন্স সায়েন্স, এনথ্রোপলোজি এমনকি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধারণাও সমাজবিজ্ঞান থেকে। সমাজবিজ্ঞানের যে বিস্তৃতিকে মনে রেখে আমাদের পাঠ করতে হবে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর মধ্যে সমাজবিজ্ঞান পাঠের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। বিভাগের ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষ্যে বিভাগের সকলকে আমি শুভেচ্ছা জানাই। এ বিভাগে অধ্যয়নের জন্য ছাত্রছাত্রীরা যেন অনুপ্রাণিত হয়, গর্বিত হয়।


বিভাগের তরুণ শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিক্ষকতাকে টাকার অঙ্ক দিয়ে মাপলে হবে না, ভালোবাসতে হবে। গবেষণাকে ভেতরে নিতে হবে। আমরা যদি ভেতরে নিতে পারি ,গবেষণা করবো ভাবি তাহলে কিন্তু মনের আত্মতৃপ্তি হবে এবং শেষ পর্যন্ত সেটা মানুষ মনে রাখবে।


সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্টেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ূন কবির। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব সোনিয়া ফারহানা ছনি, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. মাসুদুর রহমান। এরপর সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ৪র্থ বার্ষিক সেমিনার আয়োজন করে।


সেমিনারে সম্পদ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. শিপ্রা সরকার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. শেখ মুহাম্মদ কায়েস।


অনুষ্ঠানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, পরিচালক (অর্থ-হিসাব) প্রফেসর ড. তারিকুল ইসলাম, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জীসহ অন্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/রোকন/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com