অপপ্রচারকারীরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষা চালু থাকুক: শিক্ষামন্ত্রী
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৩৬
অপপ্রচারকারীরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষা চালু থাকুক: শিক্ষামন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই নিয়ে অপপ্রচার চলছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘জানুয়ারিতে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিতে বই নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছিল। এরা চায় না শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখুক, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করুক। ওরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষাই চালু থাকুক।’


৩০ অক্টোবর, সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।


লিখিত বক্তব্যে ডা. দীপু মনি বলেন, বিশ্বের ১০২টি দেশের মধ্যে ৭৬ দেশের শিক্ষাক্রমে সুনির্দিষ্টভাবে দক্ষতা-ভিত্তিক যোগ্যতাকে নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫১টি দেশের শিক্ষাক্রম সম্পূর্ণ রূপান্তরমূলক দক্ষতা-ভিত্তিক করা হয়েছে। ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোও পরিবর্তিত সময়ের চাহিদা অনুযায়ী একটা সাধারণ শিক্ষাক্রম রূপরেখা তৈরি করেছে। বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশও এর অংশীদার। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দিকে তাকালেও দেখা যায় ভুটান, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশও তাদের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।


তিনি বলেন, বাংলাদেশও একইভাবে শিক্ষাব্যবস্থায় একটি সার্বিক পরিবর্তনের তাগিদ অনুভব করছিল, যা একই সঙ্গে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় শিক্ষার লক্ষ্য শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া, মূল্যায়ন, শিখন পরিবেশ, শিখন উপকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, এলাকার জনগণসহ সব উপাদানের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে একই পরিবর্তনের ধারায় নিয়ে আসবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ সেই দীর্ঘ তাগিদ, পরিকল্পনা, গবেষণা ও অভিজ্ঞতার ফসল। কাজেই নিঃসন্দেহে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।


শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন, তারই অংশ হিসেবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী নাগরিক তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রত্যাশা করা হয়েছে, শিক্ষাব্যবস্থার এ রূপান্তরের মধ্যে দিয়েই ভবিষ্যতের স্মার্ট শিক্ষার্থীর বুনিয়াদ রচিত হবে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষার উদ্দেশ্যে শিক্ষাব্যবস্থার সব ধারাকে বিবেচনা করে প্রথমবারের মতো জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে।


‘এ রূপরেখা প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে বিস্তারিত শিক্ষাক্রম, শিখন শেখানো সামগ্রী এবং প্রণয়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে, যা এর আগে কখনই অনুসরণ করা হয়নি। শিক্ষাক্রম প্রণয়নের আগে ২০১৭-১৮ সালে এনসিটিবি কর্তৃক ১২টি গবেষণা পরিচালিত হয়, যার ভিত্তিতে এ রূপরেখা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।’


নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, পড়াশোনা ও চাকরির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন করা হবে। একক ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠনের জন্য আরও দু-তিন বছর সময় লাগবে। নতুন শিক্ষাক্রমে যেসব শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন, তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগেই আমরা এ পরিবর্তন আনতে পারবো।


সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা-বিতর্ক এবং তাদের ব্যাখ্যা ও তথ্য তুলে ধরেন।


বিবার্তা/রাসেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com