
টানা বৃষ্টি ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপের প্রভাবে বরিশাল বিভাগের তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বড় নদীগুলোতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ার দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে এই তথ্য জানিয়েছেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর এবং নদী বন্দরকে এক নম্বর সর্তক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আরো দুই-তিনদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে পানি না নামতে পারায় ফসলি ক্ষেত, লোকালয় এবং সড়কে তীব্র জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পাঁচদিনের অবিরাম বর্ষণে নাকাল হয়ে পড়েছেন বরিশালবাসী, ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কর্মজীবী, নিম্নআয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। বৃষ্টিতে অনেকেই ঘরবন্দি সময় কাটাচ্ছেন।
নগরীর কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, বৃষ্টিতে বরিশাল শহর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিটি গলিতে জলাবদ্ধতা। সিটি কর্পোরেশন শহরের বড় বড় কয়েকটি ড্রেন পরিষ্কার করে দায়িত্ব শেষ করে। অলি-গলির ছোট ড্রেন পরিষ্কার না করায় বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয় আমাদের।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, প্রতিনিয়ত শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সক্রিয় রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হচ্ছে। বর্তমানে সাময়িক জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে, কারণ শহরের চেয়ে কীর্তনখোলা নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। ড্রেন থেকে পানি নদীতে নামতে পারছে না। উল্টো নদী থেকে ড্রেন হয়ে পানি শহরে ঢুকছে।
উপকূলীয় উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর বাসিন্দারা জানান, নদীর পানি বসতিতে ঢুকে পড়েছে, বিশেষ করে ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর জেলায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপরে, ভোলার তজুমদ্দিনে সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি ৬২ সেন্টিমিটার ওপরে এবং পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা নদীর পানি ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি গেজ স্টেশনের মধ্যে ৩টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বাকি ১৬টি পয়েন্টেও পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় রয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে উপকূলীয় এলাকায় বসতবাড়ি ও ফসলের জমিতে পানি ঢুকে পড়ছে। পানি না নামলে নদীভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পানি বৃদ্ধি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে না। বর্ষাকালে দক্ষিণাঞ্চলে এটি স্বাভাবিক দৃশ্য।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]