মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে
গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলায় মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:১৮
গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলায় মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম ও গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২৬ ডিসেম্বর, বুধবার বিকাল ৪ টায় গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলা প্রাঙ্গণে এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।


এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম-এর সভাপতি ও গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি কাঁচার মেলা-এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এম শফিউর রহমান দুলু।



অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা এবং সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সেই সাথে সিটি গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান-এর ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এ এম শফিউর রহমান দুলু। এরপর ফজলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। ফজলুর রহমান স্মরণে বক্তব্য রাখেন গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার সহ-সভাপতি আবু তাহের বকুল।



অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে জাতীয় সংগীত, কচি-কাঁচার মেলার গান, আমার দেশের মাটির গন্ধে পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার শিশু ও কিশোর শিক্ষার্থীরা। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখে শিশু প্রতিনিধি গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার শিক্ষার্থী ইলমি আক্তার।



বিজয়ের এই উৎসবে সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক মলয় কুমার গাঙ্গুলির কণ্ঠে দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা গানের মাধ্যমে। সুরময় হয়ে ওঠে সম্পূর্ণ প্রাঙ্গণ। এরপর আউল বাউল, সোনায় মোড়ানো বাংলা মোদের, কারার ওই লৌহ কপাটসহ একাধিক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার শিশু ও কিশোর শিক্ষার্থীরা। সংগীত পরিচালনা করেন গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার ললিতকলার সিনিয়র শিক্ষক আশীষ কুমার শীল। এছাড়াও বিভিন্ন একক সংগীত পরিবেশিত হয়। ও আমার দেশের মাটি, সোনা সোনা, জয়ধ্বনি কর গানে নৃত্য পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার শিক্ষার্থীরা।



বীর মুক্তিযোদ্ধা মলয় কুমার গাঙ্গুলি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম-এর পক্ষ থেকে সম্মাননা জ্ঞাপন করেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বোরহানউদ্দিন খান। সেই সাথে উপস্থিত প্রায় অর্ধ-শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।



অনুষ্ঠানের সভাপতি এ. এম. শফিউর রহমান দুলু বলেন, একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ভূমিকা ছিল একদমই অন্যরকম এবং গুরুত্বপূর্ণ। বলতে গেলে স্বেচ্ছায় ও সাংগঠনিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। দেশবাসীর কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাক পৌঁছে দিয়েছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের আহবান জানিয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। তাদের অবদান অবিস্মরণীয়। সেইসাথে সকল মুক্তিযোদ্ধার অবদানে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। উপস্থিত সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।



প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের কথা সবাইর জানা। ২৬ মার্চ পাকিস্তান বেতার কেন্দ্র বন্ধ করে সূচনা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের। প্রথম বিমান হামলা আমাদের উপরই হয়েছিল। তারা বেতার আংশিক ধ্বংস করে দিয়েছিল। মেইন ট্রান্সমিটার রাখতে গিয়ে আমাদের মেরে ফেলেনি। সেইজন্য আজও বেঁচে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। বিজয়ের পর ফিরে এলাম জরাজীর্ণ বাংলায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে দেশ গড়ার কাজে লেগে পড়ল সবাই। এসব কথা বলেও শেষ হবে না। তবে, আজকে এখানে এসে শিশু কিশোরদের দেখে খুব ভালো লাগছে। ওরা আগামী দিনের ভবিষ্যত। কচিকাঁচায় এমনভাবে বেড়ে উঠছে যে ওরাই হবে দেশ গড়ার কারিগর। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলা।


এছাড়াও, গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার সমৃদ্ধি ও সকল শিশু-কিশোরদের সাফল্য কামনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী।



অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গেণ্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার সাধারণ সম্পাদক নুসরাত ইয়াসমিন রূম্পা। সাংস্কৃতিক পর্বে উপস্থাপনা করেন কামাল স্মৃতি পাঠাগারের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অরুনিমা ও গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার আবৃত্তি প্রশিক্ষক নূসরাত জাহানআফরিনআলমনিপা।


এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার ললিতকলার অধ্যক্ষ গোলাম জিলানী। একক সংগীত পরিবেশন করেন আশীষ কুমার শীল, হুমায়রা হামিদ হুমা, নাফিজা পারভীন হিয়াসহ গেণ্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা। আবৃত্তি, গান, নাচের মোহনীয় তাল, সুর ও ছন্দে রাত পর্যন্ত সুরময় হয়ে ছিল গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার প্রাঙ্গণ।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com