হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় দুই ভাবির সঙ্গে পরকীয়া দেখে ফেলায় কিশোর মোস্তাকিনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। আদালতে এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি রায়হান উদ্দিন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের আদালতে ১৬৪ ধারায় মোস্তাকিন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত রায়হান উদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
রায়হানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাসলিমা আক্তার (২০) ও রোজিনা বেগমকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এরআগে বৃহস্পতিবার সকালে র্যাব-৯ সিলেট ও শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের যৌথ অভিযানে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে রায়হান উদ্দিনকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন রায়হান। রায়হানের দেয়া তথ্যমতে একটি জমি থেকে তালা-চাবি ও রায়হানের বসতঘর থেকে একটি প্যান্টের পকেটে রাখা যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের মৃত জফর মিয়ার পাঁচ ছেলে। তাদের মধ্যে মোস্তাকিনের বড় ভাই ফজলু মিয়া দুবাই প্রবাসী, আরেক ভাই সজলু মিয়া ওমান প্রবাসী। অন্য ভাইদের মধ্যে সজল মিয়া মৌলভীবাজারের সরকার বাজার এলাকায় একটি ব্রিক ফিল্ডে কাজ করেন। সবার ছোটটি তামিম।
মোস্তাকিন তার মা ফুলবানু বিবি, ছোট ভাই তামিম, প্রবাসী ভাই ফজলু মিয়ার স্ত্রী রোজিনা বেগম, সজলু মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা বেগমের সঙ্গে চার বেডরুমের বাড়িতে থাকত। মোস্তাকিনের ভাই সজল মিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বের সুবাদে তাদের বাড়িতে একই গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে রায়হানের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। মোস্তাকিনের ঘরের ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের পাসওয়ার্ডসহ রাউটারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল রায়হানের হাতে। বাড়িতে রায়হানের সেখানে অবাধ যাতায়াত ছিল।
আদালতে রায়হানের দেয়া জবানবন্দির তথ্য অনুযায়ী, অবাধ যাতায়াতের সুবাদে প্রথমে মোস্তাকিনের বড় ভাই ওমান প্রবাসী সজলু মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা বেগম এবং পরে আরেক ভাই দুবাই প্রবাসী ফজলু মিয়ার স্ত্রী রোজিনা বেগমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান রায়হান। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে দুই-তিন মাস আগে এ নিয়ে সালিশ বসে। সালিশে উভয় পক্ষকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায়হানকে মোস্তাকিনদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করা হয় এবং তাকে দ্রুত বিয়ে করানোর জন্য পরিবারকে নির্দেশ দেয়া হয়। সালিশের রায় মেনে সম্প্রতি রায়হানকে বিয়েও দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও মোস্তাকিনদের বাড়িতে রায়হানের যাতায়াত চলছিল।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]