শীতের সকাল, ঘড়ির কাটায় ৯টা বাজলেও সূর্যের দেখা মিলেনি। কুয়াশার চাদরে ঢাকা আকাশ। কৃষকরা ইরি ধান লাগাতে ক্ষেত পরিচর্যা করছে। পরিচর্যাকৃত বিলছায়া বিলের ক্ষেতগুলোতে সাদা বক পাখির দেখা মিলছে। এতে প্রশান্তি বইছে স্থানীয়দের মাঝে। অপরদিকে বক শিকারি কমে যাওয়ায় এই সাদা বকের আগমন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার নিম্ন অঞ্চলের ছোট ছোট বিল ও ক্ষেতের আইলে এই দৃশ্য দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নিকরাইল, জোকারচর ও সল্লা পশ্চিম পাড়া,পূব পাড়া বিল, আন্দর বিল, দেউপুর বিল, হাতিয়া বিল ও বিলছায়া বিলসহ ক্ষেতের আইলে পাশ দিয়ে অল্প পানিতে গলা উঁচু করে মাছ শিকার করছে।
এক শিকারি বলেন, শখ করে বিলছায়া বিলে বক শিকার করতে এসেছিলাম। অভিনব কায়দায় লাইলোনের সুতা দিয়ে যখন শিকারির কাছে যাই, তখনি স্থানীয়রা বুঝতে পেরে আমাকে সরিয়ে দেয়।
স্থানীয় সাবেক সেনা সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনসচেতনতাসহ সঠিক নজরদারি রাখছে। তবে তিনি মনে করেন, প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের সচেতনতা থাকলে শিকারিরা শিকার করতে পারবে না। তাদেরকে বোঝাতে হবে এই পাখি যেভাবে হারিয়ে যেতে শুরু করছে। তাতে করে পরবর্তী জেনারেশন বক পাখি বই পুস্তকে পড়বে কিন্তু বাস্তবে দেখা মিলবে না।
ঢাকা থেকে বিয়ের দাওয়াত খেতে আসা টুটুল নামের এক অতিথি বলেন, অনেক বছর পর একত্রে এত বক দেখলাম। নীচু জমিতে অল্প পানিতে ছোট ছোট মাছ শিকার করছে। কাছে যেতে ইচ্ছা হল আর তখনি এগিয়ে গেলেই একে একে চলে গেল বকের পাল। তবে তিনি মনে করেন শিকারিদের ভয় দূর হলেই হয়তো বকের আগমন আরও বাড়বে। আমার সন্তান বড় হচ্ছে আজও বাস্তবে বক পাখিটিকে দেখাতে পারিনি। তাই জনগণের সবচেয়ে আগে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। না হলে হারিয়ে যাবে এসব নান্দনিক পাখিগুলো।
বিলছায়া গ্রামের আসিফ মিয়া জানান, ভোরের কুয়াশা ও বিকেল বেলায় বকের আনাগোনা বেশি থাকে। এরা বেশিরভাগ ঝাঁক বেঁধে চলাচল করে। এদের কাছে গেলেই এরা একে একে ঝাঁক বেঁধে সবাই চলে যায়। এই দৃশ্য না দেখলে বোঝা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এর আগে শিকারিদের ভয়ে এই সাদা বক পাখি কম দেখা যেত। ইদানিং এই সাদা বক পাখির আগমন লক্ষ করা যাচ্ছে।
কালিহাতী উপজেলার সল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম বলেন, গত বছরেও এত বক পাখির দেখা মেলেনি। এবার শীতের আগমনে সাদা বক পাখির আনাগোনাতে শিকারিদের পদচারণাও আছে বেশ। তারা শিকারের চেষ্টা করলে স্থানীয়রা সেটি প্রতিহত করবে।
তিনি আরও জানান, আমাদের এই বিলে কোনো পাখি শিকারি শিকার করতে পারবেনা। এবিষয়ে স্থানীয়া সজাগ রয়েছেন ।
বিবার্তা/বাবু/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]