
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে কুষ্টিয়া অঞ্চলের খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা। এবার কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে জেলার প্রায় ২০ হাজার খামারি লালন পালন করেছেন প্রায় ২ লক্ষাধিক গরু। তবে এবারের কোরবানিতে নজর কেড়েছে কুষ্টিয়া শহরতলীর বারখাদা এলাকার খামারি সাজুর ষাঁড় ‘কালো মানিক’। এক টন বা ১০০০ কেজি ওজনের এ ষাঁড়ের দাম হাঁকানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা। প্রকাণ্ড এ ষাঁড়টি এক নজর দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন সাজুর বাড়িতে।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহরতলীর বারখাদা এলাকার প্রান্তিক গো-খামারি সাজু শংকর জাতের একটি এঁড়ে গরু কিনেছিলেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। নিজের খামারে পাঁচ বছর ধরে পরম যত্নে লালন পালন করেছে গরুটি। এক সময়ের ছোট এঁড়ে গরুটি এখন বিশাল আকৃতির একটি ষাঁড়। লম্বায় ৮ ফুট এবং উচ্চতায় সাড়ে ৫ ফুট গরুটির ওজন প্রায় এক হাজার কেজি বা এক টন।
এবারের কোরবানিতে ষাঁড়টি ১০ লাখ টাকায় বিক্রির আশা করছেন খামারি সাজু। তিনি জানান, গত ৫ বছর ধরে গরুটি পরম যত্নে লালন পালন করছেন। গরুটি যে, এত বড় আকারের হয়ে উঠবে তা তিনি আগে ভাবেননি। তিনি শখ করে ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন কালো মানিক।
তিনি বলেন, অনেকে খামারি গরু দ্রুত মোটা তাজা করতে বিভিন্ন ওষুধ ও ফিড খাওয়ান। তবে সাজুর দাবি তিনি এ ষাঁড়টিকে কখনই ক্ষতিকারক কোন কিছু খাওয়াননি। তার গরুর খাবার তালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খেসাড়ি, গম ও বিভিন্ন ডাল বীজের খোসা ও চিটা গুড়।
সাজু বলেন, ১০ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে চান তিনি। কিছু কম হলেও বেচে দেবেন। তবে আশানুরূপ দাম নিয়ে সংশয় আছে সাজুর মনে।
তিনি বলেন, এবার স্থানীয় ক্রেতার পাশাপাশি বাইরে থেকে আসা ব্যাপারীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় কম।
এদিকে বৃহৎ আকার এই ষাঁড়টি এক নজর দেখতে এলাকার অনেকেই ভিড় করছেন সাজুর খামারে। সেখানে আসা শহরতলীর জুগিয়া এলাকার আব্দুল আলিম বলেন, এত বড় আকারের গরু তিনি এর আগে কখনো দেখেননি।
এদিকে, গোখামারি সাজুর এমন সাফল্যে উজ্জীবিত এলাকার অনেকে। আগামীতে তারাও এভাবে একটি-দুটি করে গরু লালন পালন করে লাভবান হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করছেন।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মামুন হোসেন মন্ডল বলেন, জেলায় এবার প্রচুর গরু পালন করছেন খামারিরা। তবে ঈদ এগিয়ে আসায় তাদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। জেলার সব খামার মালিকরা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাজারে গরু নিয়ে লাভ করতেন। কিন্তু এবার ক্রেতা কম থাকায় তারা চিন্তিত। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে গরুর বাজার।
তিনি বলেন, আমরা খামারিদের মনোবল বাড়াতে কাজ করছি। তাদের নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে আসছি। কোরবানির ঈদের আর মাত্র কদিন বাকি। তাই শেষ মুহুর্তে খামারি ও গরু পালনকারীরা পরম যত্নে লালন পালন করা তাদের পশুটি বিক্রয়ের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বিবার্তা/শরীফুল/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]