চুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে বাড়িতে কান্নার রোল
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৭
চুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে বাড়িতে কান্নার রোল
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থী শান্ত সাহার (২২) লাশ নরসিংদীতে এসে পৌঁছেছে।


২৩ এপ্রিল, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়ার সেবাসংঘ এলাকায় বাড়িতে তার লাশ পৌঁছায়। এসময় তার পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।


পরিবার সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের ছুটি কাটিয়ে গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন শান্ত। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শান্তর সহপাঠীরা তার বড় ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা কৌশিক সাহার মুঠোফোনে মৃত্যুর খবর জানান। তিন ভাইয়ের মধ্যে শান্ত সবার ছোট। তার মেজ ভাই ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।


সকালে বাড়িতে লাশ পৌঁছার পর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন শান্তর মা শিউলি সাহা। বুকে-কপালে চাপরে আহাজারি করে বলছেন, আমার সোনার চাক্কা আর নাই, আমিও আর বাঁচতে চাই না। পোলা ইঞ্জিনিয়ার হইয়া বিদেশে যাইব। আমারে কইছিল, “মাগো, তোমারে বিদেশে নিয়া গিয়া চিকিৎসা করামু।” আমার ইঞ্জিনিয়ার পুতে গেল কই? আমারে কে বিদেশ নিয়া যাইব? আমার পোলারে আইন্যা দেও তোমরা।’


শান্তর লাশ দেখে স্বজন ও প্রতিবেশীরাও কাঁদতে শুরু করেন। এসময় তারা মা শিউলি সাহাকে শান্তনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।


পরিবারের সদস্যরা জানান, শান্তর লাশ আনতে তারা চট্টগ্রামে যেতে চেয়েছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয়, ময়নাতদন্ত শেষে ফ্রিজিং গাড়িতে করে তার লাশ নরসিংদীতে পৌঁছে দেয়া হবে। কোনো অভিযোগ নেই, মামলাও করতে চান না জানিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করার অনুরোধ জানান। যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে সোমবার রাত ১০টার দিকে লাশবাহী গাড়ি নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে লাশ নরসিংদীর বাড়ীতে এসে পৌঁছায়। লাশ নিয়ে এসেছেন শান্তর হলের দুই সহকারী প্রভোস্ট মাসুম রানা ও সামিউন বশির এবং সাতজন সহপাঠী।


চুয়েটে পড়ুয়া শান্তর স্কুলজীবনের বন্ধু সৈকত শাহরিয়ার জানান, ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু হলের ৪তলার একটি কক্ষে থাকতেন শান্ত। সম্প্রতি ছুটিতে বাড়িতে এসে মোটরসাইকেল চালানো শিখছিলেন তিনি। ছুটি কাটিয়ে ক্যাম্পাসে ফেরার পরদিন (সোমবার) দুটি ক্লাস করে দুপুরে তার হলের এক বড় ভাইয়ের মোটরসাইকেলটি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল বিভাগের দুই ছোট ভাই। ফেরার পথে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয় একটি যাত্রীবাহী বাস।


নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিল ঘোষ বলেন, শান্ত সাহার মতো এমন মেধাবী শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তার মা-বাবাকে শান্তনা দেয়ার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না। এভাবে কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।


বিবার্তা/কামাল/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com