ফেসবুক পোস্টের জন্য প্রভাষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ!
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৮:১৩
ফেসবুক পোস্টের জন্য প্রভাষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ!
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নেতিবাচক পোস্ট করায় পাংশা সরকারি কলেজের প্রভাষক শামীমা আক্তার মিনুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।


২৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার সকালে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ইয়ামিন আলী। আগামী দশ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।


নোটিশে বলা হয়েছে, শামীমা আক্তার মিনু একজন সরকারি বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়েও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রতিযোগিতার বিচার কার্যক্রম ও পুরস্কার প্রদানকে প্রশ্নবিদ্ধ দাবি করে অযৌক্তিকভাবে উপজেলা প্রশাসনকে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। এতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং পাংশা সরকারি কলেজের ইমেজেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।


এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রভাষক শামীমা আক্তার মিনুর ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। পরে তার স্বামী (আব্দুল মান্নান) পাংশা আইডিয়াল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলেন, আমরা কলেজ থেকে কোন নোটিশ পাইনি। তবে এর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছে সেটা কি তিনি করতে পারেন? এমনকি ফেসবুকে পোস্টের কারণে অধ্যক্ষ (পাংশা সরকারি কলেজ) তিনিও কারণ দর্শানোর নোটিশ করতে পারেন না। আমার স্ত্রী তার নিজের মতামত প্রকাশ করেছে।


তিনি আরও বলেন, আমি একটা কলেজের অধ্যক্ষ। আমি ইউএনও থেকে বড় স্কেলে চাকরি করি। অথচ ইউএনও অফিসের একজন ক্লার্কের যে মূল্যায়ন করে আমাদের সেটাও করে না।


পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ইয়ামিন আলী কারণ দর্শানোর নোটিশের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে মাননীয় রেলপথ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম উপস্থিত ছিলেন। অথচ সেই অনুষ্ঠান নিয়ে বিষোদ্‌গার করেছে।


তিনি আরও বলেন, তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।


উল্লেখ্য, শামীমা আক্তার মিনু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন ‘আমাদের কতটা অধঃপতন হয়েছে কষ্ট করে একটু ভাবুন। এই দিনকে কেন্দ্র করে স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা প্রায় এক মাস ধরে অনুশীলন করে কুচকাওয়াজ ডিসপ্লে ও অন্যান্য প্রতিযোগিতার জন্য। তারপর অনেক উৎসাহ আনন্দ নিয়ে রোদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। আর এদিকে বিচারকমণ্ডলী সুন্দরভাবে সেজেগুজে এসে আরামে বসে গল্পে মেতে থাকে। তারা ভালোভাবে সময় নিয়ে দেখেই না। আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখে কাদেরকে পুরস্কৃত করবে। এত কষ্ট করে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে সামান্য কয়েক টাকার একটা পুরস্কার নিয়ে যাওয়ার আশায় শিক্ষার্থীদের এত আনন্দ উল্লাস। কিন্তু খুবই কমসংখ্যক প্রতিষ্ঠান এগুলো পায়। বাকি প্রতিষ্ঠান চলে যায় খালি হাতে। বাকি পুরস্কার বরাদ্দ থাকে লোক দেখানো বিচারকদের জন্য, সাংবাদিক নামের কিছু মানুষের জন্য, সুধী সমাজের জন্য, প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাদের জন্য। এই হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা দিবস পালন। সব জায়গাতেই স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, মাইকের সামনে বড় বড় বুলি, শুধু লোক দেখানো, দায় সারা। দেশাত্মবোধ থেকে কিছুই করছি না। আমরা বাচ্চাদের কি শেখাবো, হায়রে আমার স্বাধীনতা।’


বিবার্তা/মিঠুন/রোমেল/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com