
কিশোর গ্যাং গ্রুপের মদদদাতা হিসেবে যারা কাজ করছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ বলেন, বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা স্থানীয় বড় ভাইদের হয়ে কাজ করে।
২৩ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অনেকেই এসব গ্রুপের সদস্যদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যারা এসব গ্যাং গ্রুপের মদদদাতা রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান রয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার মহাখালী, বনানী, বিমানবন্দর, টঙ্গি ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬টি কিশোর গ্যাং গ্রুপের দলনেতাসহ ৩৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ২৪টি মোবাইল, ১টি ব্লেড, ১টি কুড়াল, ১টি পাওয়ার ব্যাংক, ৫টি রড, ১৬টি চাকু, ৩টি লোহার চেইন, ১টি হাতুড়ি, ১টি মোটরসাইকেল এবং ২৪ হাজার ২৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
তারা হলেন- ০০৭ গ্রুপের দলনেতা আল-আমিন, জাউরা গ্রুপের দলনেতা মাহাবুব, বাবা গ্রুপের দলনেতা সাদ, ভোল্টেজ গ্রুপের মনা, ডি কোম্পানি গ্রুপের (লন্ডন পাপ্পু চালায়) মো. আকাশ ও মো. আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর গ্রুপ ওরফে বয়রা জাহাঙ্গীর গ্রুপের দলনেতা।
এসব গ্রুপের বাকি সদস্যরা হলেন- রাসেল, আরাফাত, রবিন, ইসলাম, জুয়েল, রবিউল, মুরাদ, রোহান, হৃদয়, ওবায়েদ, মো. জিসান, মো. ঈমন, মো. রমজান, মো. সজিব, মো. শাকিব, মো. রাজিব, শাহজাহান সাজু ওরফে রাসেল, মো. জিলাদ মিয়া, মো. হৃদয়, রায়হান, মো. বাবু মিয়া, মো. শাহজাহান, মো. জালাল মিয়া, লামিম মিয়া, মো. রাকিব, মো. হিরা মিয়া, ইমরুল হাসান, মো. সাকিন সরকার রাব্বি, মো. সুজন মিয়া, খাইরুল ও রাহাত।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ বলেন, বর্তমান সময়ে কিশোর গ্যাং, গ্যাং কালচার, উঠতি বয়সি ছেলেদের মাঝে ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক গ্রুপের সঙ্গে অন্য গ্রুপের মারামারি করা বহুল আলোচিত ঘটনা। গ্যাং সদস্যরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে উচ্চশব্দে গান বাজিয়ে দলবেঁধে ঘুরে, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়, পথচারীদের উত্ত্যক্ত করে এবং ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মারামারি করে। এছাড়া তারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে তাদের বিশৃঙ্খলায় কেউ প্রতিবাদ করলেও খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর মহাখালী, বনানী, বিমানবন্দর, টঙ্গি ও গাজীপুর এলাকায় একাধিক অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি গ্রপের আনুমানিক সদস্য ১০ থেকে ১৫ জন। তারা টাকার বিনিময়ে মারামারি, দখলবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, অস্ত্র, ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
কিশোর গ্যাং গ্রুপের মদদদাতা কারা, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, কিশোর গ্যাং গ্রুপের দলনেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু ব্যক্তি এসব গ্যাংকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা মদদদাতাদের হয়ে মারামারি করে। তাদের হয়ে কাজ করার কারণে অপরাধ করে শেল্টার পায়। যারা তাদের মদদদাতা হিসেবে কাজ করছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতাদের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক মিছিল মিটিংয়ে দেখা যায়। এসব মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ বলেন, অপরাধীদের কোনো দল বা ঠিকানা থাকতে পারে না। তাদের পরিচয়, তারা কার হয়ে কাজ করে তা বিবেচ্য বিষয় নয়। অপরাধ করলেই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]