ঘটনার ৩২ দিন অতিবাহিত হলেও খুনিদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার আশেপাশে কর্ণফুলীর পুরাতন ব্রিজঘাট ও চরপাথরঘাটার একাধিক সিটিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করেও কোনো কূল-কিনারা করতে পারেনি থানা পুলিশ, পিবিআই ও ডিবি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সিএমপি কর্ণফুলী থানার কর্মকর্তা এসআই আবুল কালাম বলছেন, একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হলেও স্পষ্টত কোন তথ্য মেলেনি। এমনকি সন্দেহজনক ১০ জনের অধিককে থানায় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোন ক্লু মেলেনি।
ওদিকে, বসে ছিল না ছায়া তদন্ত হিসেবে মাঠে নামা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্টোর ইন্সপেক্টর মহি উদ্দিন সেলিম ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম। তারা সকলেই ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য ভেদ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে চলেছেন। ঘটনাস্থলে একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। তবে সাফল্য বলতে কিছু নেই এখনো।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তমিজ উদ্দিন চেয়ারম্যান সড়কের পূর্ব পাশে একটি ধান ক্ষেতের জমিতে মো. আজিবুল ইসলাম আরিফ (১৮) নামে এক অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ভিকটিম আরিফের মা শাফিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি রেখে সিএমপি কর্ণফুলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার জিআর মামলা নং -১৭।
ওদিকে, ঘটনার ৩২দিনেও নিজ ছেলে হত্যার খুনিরা ধরা না পড়ায় উল্টো মামলার বাদি অজানা ভয়ে কর্ণফুলী ছেড়েছেন বলে জানা যায়। ওই পরিবারের দাবি তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
অন্যদিকে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। পুলিশের উপর এখনো আস্থা রয়েছে সাধারণ মানুষের। যদিও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গত কয়েক বছর আগেও একই পদ্ধতিতে আরেক রিকশা চালককে হত্যা করা হয়েছিল, তখন পুলিশ ওই ঘটনা সুরাহা করতে পারলেও এবার রিকশা চালক আরিফের ঘটনায় কোনো প্রকার ‘ক্লু’ উদ্ঘাটন ও খুনিদের ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় যদিও হতাশা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদি।
এক সপ্তাহ যাবৎ বাদীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে শেষে কথা হয় মামলার বাদির সাথে। এতে বাদি শাফিয়া বেগম জানান, আমাদের সন্দেহ অন্য দিকে। ছেলেকে যারা খুন করেছে তারা বহিরাগত। আমি এখন কর্ণফুলীতে নেই। পুলিশকে সব জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ এক মাসেও কোন ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে কর্ণফুলী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আরিফ হোসেন বলেন, আমাদের একাধিক টিম জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এটি ক্লুলেস ঘটনা তাই একটু কষ্ট হচ্ছে। যেহেতু লেগে আছি সত্য বের হবেই। তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই। আমরা চেষ্টা করতেছি।
বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা জানান, পুলিশ খুব সূক্ষ্মভাবে এ হত্যা মামলার তদন্ত চালাচ্ছে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড তা খতিয়ে দেখতে একাধিক টিম বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে তদন্তের কাজ করছে। ইতিমধ্যে আমরা অনেক তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি; সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। খুনের রহস্য উদ্ঘাটন হবেই আর খুনিরাও ধরা পড়বে। তবে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য নেই বলার মতো।
প্রসঙ্গত, নিহত আরিফ এর বাড়ি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কালামারছড়া ইউনিয়ন। তার পিতার নাম আব্দুর রহমান। গত তিন বছর যাবত আরিফ মায়ের সাথে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর গ্রামের গান্ধীর বাড়ির একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।
বিবার্তা/জাহেদ/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]