দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় আত্রাই নদীর পানি কমতে শুরু করায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে বাসতভিটা, ফসলি জমি। এতে দুশ্চিন্তায় ওই এলাকার মানুষ।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আলোকঝাড়ী, খামারপাড়া ও ভাবকী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, গাছপালা। এমনকি আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের সরকারি গুচ্ছগ্রামের আবাসন প্রকল্প, খানসামা টিটিসি ও কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান। এছাড়াও ভাবকী ইউনিয়নের চাকিনীয়া গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি,খামারপাড়া ইউনিয়নের মালিজালের ঘাট ও জোয়ার গ্রামের আত্রাই নদী তীরবর্তী প্রায় ৩শ পরিবারের শেষ সম্বল টুকু কেড়ে নিতে পারে নদী ভাঙন। ইতিপূর্বেই এই বর্ষার নদী ভাঙনে এই তিন অঞ্চলের প্রায় ৩০০ একর আবাদি কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এমনকি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ওইসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের পৈতৃক নিবাসের শেষ সম্বলটুকুও।
স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙনে কয়েকদিন ধরে একের পর এক বসতভিটা বিলীন হচ্ছে আমাদের বসতভিটা, ফসলি জমি ও গাছপালা। তিন বছর আগে বর্ষাকালে হঠাৎ করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আবাদি জমির ওপর দিয়ে স্রোত যায়। এতে প্রায় আমাদের প্রায় ৩০০ একর আবাদী জমি নদীতে পরিণত হয়ে যায়। আর এ বছর ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে একেবারে বাড়ির কাছে এসে পৌছেঁছে। আমাদের বাড়িঘর গুলো নিয়ে হুমকির মধ্যে রয়েছে। আমরা নদী ভাঙ্গন রোধে ও বাড়িঘর রক্ষার জন্য নদীতে বাঁধ নির্মাণের জন্য ভুক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলার চাকিনীয়া গ্রামের নদীর পাড়ের বাসিন্দা আব্দুল গনি বিবার্তাকে বলেন, আমার ৩ বিঘা জমি চাষ করে সংসার চলত। এ বছর নদীতে সেই শেষ সম্বল জমি ও গাছ বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বসতবাড়ি নিয়ে হুমকির মধ্যে রয়েছি।
গুচ্ছগ্রামের আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা লক্ষন রায় জানান, নদী ভাঙতে ভাঙতে আমার বাড়ির কাছে প্রায় চলে এসেছে। আমি সরকারের অনুরোধ করছি আমাদের বাঁধের ব্যবস্থা করে দেন।
খামারপাড়া ইউনিয়নের মালিজালের ঘাট দাসপাড়ার নাজমুল হক বলেন, ধীরে ধীরে আত্রাই নদী আমাদের খেয়ে ফেলছে। এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে এ আমাদের গ্রামের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
আলোকঝাড়ী ইউপি সদস্য এনামুল হক বিবার্তাকে বলেন, যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে এভাবে চলতে থাকলে গুচ্ছগ্রামের আবাসন প্রকল্প ও কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান বিলীন হয়ে যেতে পারে নদীতে।
ভাবকী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী ভাঙ্গন রোধে যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাজউদ্দীন বিবার্তাকে বলেন, নদী ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয় কুমার মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে আমি ইতিমধ্যে এলাকাটি ভালো ভাবে পরিদর্শন করেছি। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করে ভাঙন রুখতে যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবার্তা/জামান/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]