সিরিজ বোমা হামলার ১৮ বছর পর জেএমবি সদস্য গ্রেফতার
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩, ১৬:১৪
সিরিজ বোমা হামলার ১৮ বছর পর জেএমবি সদস্য গ্রেফতার
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর তেজগাঁও থেকে তুহিন রেজা নামের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য এবং ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে পলাতক তুহিন রেজা অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ করতেন।


বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাতে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।


২৩ জুন, শুক্রবার () দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।


র‍্যাব অধিনায়ক বলেন, সিরিজ বোমা হামলায় সারাদেশের মতোই ঝিনাইদহ জেলার ডিসি অফিস, জজ কোর্ট ও পায়রা বন্দরসহ কয়েকটি এলাকায় একই সময়ে একযোগে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।


এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি ঝিনাইদহ স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষে অভিযুক্ত ২১ জনের সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে আদালত তাদের অভিযোগপত্র পুনঃবিবেচনার মাধ্যমে ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৪ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং ৭ জনকে খালাস দেয়।


পরবর্তীতে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা চালানো শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত ১৪ জন আসামির মধ্যে ১২ জনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে। পলাতক ২ জনের মধ্যে মামলার ১০ নম্বর আসামি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে পলাতক জেএমবি সদস্য তুহিন রেজাকে বৃহস্পতিবার রাতে তেজগাঁও রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৭ নম্বর আসামি মোহন এখনো পলাতক রয়েছে।


প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিত্তিতে তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত তুহিন ২০০৪ সালে জেএমবির ঝিনাইদহ সদর শাখায় সদস্য হিসেবে যোগ দেন। যোগদানের পর থেকে তিনি এই শাখার লিফলেট তৈরি, লিখিত প্রচার-প্রচারণার সম্পাদনা, গোপন ও নাশকতমূলক খবরাখবর আদান-প্রদান, বিভিন্ন ভিডিও এডিটিং এর মাধ্যমে তৈরি করা বিভ্রান্তিমূলক প্রামাণ্যচিত্র দিয়ে তরুণদের পথভ্রষ্ট করতেন।


লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট হামলাকে কেন্দ্র করে পূর্ববর্তী দীর্ঘ সময় ধরে তারা হামলার নীলনকশা সাজায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭ আগস্ট ভোর থেকেই অন্য হামলাকারীদের সঙ্গে তুহিন আদালত চত্বরের আশেপাশে অবস্থান নেয় এবং হামলার সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এলোপাতাড়ি বোমা হামলার পর তারা বিভিন্ন দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।


তুহিন ১৭ আগস্ট বোমা হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে ঝিনাইদহ সদরে জঙ্গি ক্যাম্পে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকে জানিয়ে র‍্যাব অধিনায়ক বলেন, এরপর তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে কিছুদিনের মধ্যে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। এখানে সে প্রথমে যাত্রাবাড়ী পরে খিলগাঁও, উত্তরা, মহাখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থান পরিবর্তন করে বসবাস করে।


র‍্যাবের এই কর্মকতা আরো বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে সে বিভিন্ন সময় বাসা পরিবর্তন করে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বসবাস শুরু করে। ২০২১ সাল থেকে সে তেজগাঁও এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে এবং সেখান থেকেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পলাতক অবস্থায় সে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভিডিও এডিটিংসহ বিভিন্ন সফট্ওয়্যার ভিত্তিক কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com