মসজিদের টাকা লোপাট, সাবেক সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৩, ২০:০৬
মসজিদের টাকা লোপাট, সাবেক সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের ধর্মপুর জামে মসজিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। মসজিদের প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ক্যাশ ফেরত না দেয়ায় সংস্কার কাজ করতে পারছেননা মুসল্লিরা। তবে ১২ লক্ষ টাকা ক্যাশ ফেরত পেতে ইতি মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গ্রামবাসি। এতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ।


ধর্মপুর জামে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৭৩ সালে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের উদ্যোগে চার শতাংশ জায়গার উপর মসজিদ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তিতে মসজিদটি পূর্ণনির্মানের প্রয়োজন হলে গ্রামের লোকমান প্রামানিকসহ তিনজন ব্যক্তি আরো দেড় শতক জায়গা মসজিদে দান করেন। এর পর মসজিদটিতে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়।


মসজিদ নির্মাণের পর থেকে গ্রামের এবং এলাকার লোকজনের দানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ বিঘা ধানী জমি রয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামের আব্দুল মান্নান মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং নাছির উদ্দীন সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব নিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৬বছর ধরে মসজিদটি পরিচালনা করেছেন।


এসময়ের মধ্যে মসজিদের পক্ষ থেকে জমি বন্ধক, বিভিন্ন জলাশয় লিজ নিয়ে এবং বিভিন্ন লোকজনের দান করা অনুদানসহ প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা ক্যাশ হয়েছে। এরই মধ্যে নির্মিত মসজিদটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরায় এবং কিছু জায়গা ভেঙ্গে যাওয়ায় গত বছর মসজিদটি পূর্ন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় মুসল্লিরা। কিন্তু নির্মিত মসজিদের জায়গার দাগ নম্বর ভুল আছে, এমন অযুহাতে ওই কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ কিছু ব্যক্তি হিসাব-নিকাশ এবং মসজিদের কাগজপত্র বুঝে না দিয়ে হঠাৎ করেই টিনের বেড়া দিয়ে গ্রামে আরো একটি নতুন মসজিদ নির্মান করে।


মোস্তাফিজুর অভিযোগ করে আরো বলেন, আমরা মুসল্লিরা বার বার সভাপতি-সম্পাদককে তাগাদা দিয়ে কোন ফল পাচ্ছি না। কোন ভাবেই তারা টাকা ফেরত দিচ্ছে না। ফলে মসজিদটি সংস্কার করতে পারছিনা। যে কোন মূহুর্তে মসজিদটি ধ্বসে পরে বড় ধরণের দূর্ঘটা ঘটতে পারে। তার পরেও মুসল্লিরা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ মসজিদেই নামাজ আদায় করছেন।


এঘটনায় টাকা ফেরত পেতে মনিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। কয়েক দফা তারিখ দিয়েও ওই পক্ষ হাজির না হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান সমাধান করতে পারেননি। ফলে সমাধানের লক্ষ্যে বাধ্য হয়ে গ্রামের ৫৪জন মুসল্লির স্বাক্ষরীত একটি অভিযোগ পত্র গত বৃহস্পতিবার আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছি। মুসল্লিরা দ্রুত এঘটনার শান্তিপূর্ণসামাধান চান।


জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির সাবেক সম্পাদক ও ক্যাশিয়ার নাছির উদ্দীন বলেন, মসজিদের জায়গার দলিলে একটু ভুল থাকায় মুসল্লিদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। ফলে নতুন আরো একটি মসজিদ নির্মান করতে হয়েছে। তিনি বলেন,১০ থেকে ১২লক্ষ টাকা নয়,৮ লক্ষ ২২ হাজার টাকা আমাদের কাছে আছে।


গত এক সপ্তাহ আগে বসে ওই টাকা থেকে তিন ভাগের দুই ভাগ পুরাতন জামে মসজিদ এবং এক ভাগ টাকা আমাদের নতুন মসজিদ পাবে এমনটি সমাধান করে দিয়েছিল গণ্যমান্য লোকজন, কিন্তু অভিযোগকারীরা তা না মানায় টাকাগুলো সমাজে গচ্ছিত রাখা আছে। যে কোন সময় সমাধান হলেই টাকাগুলো হস্তান্তর করা হবে।


আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/সাহাজুল/এমএ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com