শিরোনাম
জীবনের শেষ বেলায় ছকিনা বেগম একটি সরকারি ঘর চায়
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৩, ১৬:১১
জীবনের শেষ বেলায় ছকিনা বেগম একটি সরকারি ঘর চায়
হিলি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জীবনের শেষ বেলায় এসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফাটল ধরা মাটির কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের (৭০) বছর বয়সী অসহায় ছকিনা বেগমকে। জরাজীর্ণ আর ফাটল ধরা মাটির একটি মাত্র ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছে বৃদ্ধা ছকিনা। প্রতিবেশীদের দেয়া খাবারেই তার বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা। এরি মধ্যে বাসা বেধেছে ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগ ছখিনা বেগমের শরীরে। জীবনের শেষ বেলায় এসে তার একটিই চাওয়া থাকার জন্য একটি ঘর করে দিবে সরকার।


বুধবার (৮ মার্চ) সরেজমিনে হাকিমপুর হিলি পৌর শহরের চন্ডিপুর গ্রামে (৭০) বয়সী ফাটল ধরা মাটির কুঁড়ে ঘরে বসবাস করা ছকিনা বেগমের সাথে দেখা করতে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পড়ে। দেখা যায় চারদিকে ঝোপঝাড় আর জরাজির্ণ পরিবেশে বসবাস করেন ছকিনা বেগম। প্রায় ৬০ বছরের পুরনো ফাটল ধরা মাটির একটি ঘরে জীবণের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছেন তিনি।


কথা হয় ছকিনা বেগমের সাথে তিনি জানান, আকাশে মেঘ দেখলেই তার মন আঁতকে ওঠে। বৃষ্টিতে ফাটল ধরা মাটির ঘরটি যেকোন মুহুর্তে ঢসে পড়তে পারে! এই ভয় তার মনে সব সময়। যেখানে তিন বেলা নিজের খাবার জোগার করায় দায় সেখানে নতুন ঘর নির্মাণ করা স্বপ্ন দেখা ছাড়া কিছুই না।



তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে তার শরীরে ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে। ঔষুধ আর খাবার জোগাড় করা তার জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্বামীর মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। এমাত্র ছেলে সেও ঢাকায় থেকে শ্রমিকের কাজ করে। মায়ের খোঁজ নেয় না। দুই মেয়ে আছে তারাও বিয়ে করে জামাইয়ের বাড়িতে থাকে। মেয়ে জামাইয়েরও অভাব অনটনের সংসার। মাঝে-মাঝে তাদের সাধ্যমতো সহযোগীতা করে। শেষ বয়সে শেখ হাসিনা সরকারের দেওয়া বয়স্ক ভাতার টাকা আর প্রতিবেশীদের সবার সহযোগীতায় বেঁচে আছে ছকিনা বেগম।


ছকিনা বেগমের প্রতিবেশী সেলিনা বেগম, লিপি বেগম, ঝর্ণা বেগম, তোফাজ্জল মন্ডল, মাসুম ও হারুন উর রশিদ জানায়, দারুন কষ্টে দিন কাটে অসহয় ছকিনা বেগমের। একমাত্র ছেলে সেও ঢাকায় থাকে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালায়। সেও বৃদ্ধা মায়ের খোঁজ খবর নেয় না। দুই মেয়ে বিয়ে-শাদি হয়েছে জামাই বাড়িতে সংসার করছে। স্বামী বেঁচে থাকতে আগে ছকিনা বেগমের দিন ভালোই কাটতো। এখন জীবনের শেষ বেলায় এসে স্বামী নাই, সন্তান খোঁজ খবর নেয় না। তাই খুব কষ্টে ফাটল ধরা মাটির কুঁড়ে ঘরে খায়ে না খায়ে জীবন যাপন করতে হচ্ছে ছকিনা বেগমকে। তার এখন শুধু একটায় চাওয়া নিজের জায়গায় সরকারি একটি ঘর কবে পাবো।


হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-আলম জানান, খবর পেয়ে ছকিনা বেগমের বাড়ি পরিদর্শণ করেছি। অনেক কষ্ট আর মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধা ছকিনা বেগম। একটি মাত্র মাটির ঘর আছে তার, তাও আবার ৫০-৬০বছরের পুরোনো এবং ফাটল ধরা।


তিনি আরও জানান, সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে ওই বৃদ্ধাকে একটা ঘর দেয়ার কথা বলা হলেও নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে তিনি যেতে চান না। যেহেতু বৃদ্ধা একাই থাকেন তাই তার অসুখ-বিসুখ হলে তাকে কে দেখবে এমন নিরাপত্তার ভয়ে তিনি সেখানে যেতে চান না। তবে জামি আছে ঘর নাই এমন প্রকল্প আসলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বৃদ্ধা ছকিনা বেগমকে বাস যোগ্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে।


হাকিমপুর উপজেলা চেয়াম্যান হারুন উর রশীদ হারুন জানান, প্রকল্প এলেই বিধি মোতাবেক বৃদ্ধা ছকিনা বেগমকে একটি সরকারি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে তা সঠিক ভাবে বলতে পারেন নাই তিনি।



বিবার্তা/রববানী/নয়ন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com