উত্তরের খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ শুধু চালই নয়, বর্তমানে এই জেলায় উৎপাদিত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট আমের সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও স্থান করে নিয়েছে।
বর্তমানে জেলার আম বাগানে সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। মুকুলের পাগল করা ঘ্রানে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে চারদিক। আবহাওয়া ভালো থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন নওগাঁর বাগান মালিকরা।
জেলা কৃষিসপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৫২৫ হেক্টর বেশি। উপজেলাভিত্তিক আমবাগানের পরিমাণ হলো-সদর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর, মান্দায় ৪০০ হেক্টর, রানীনগরে ১৩০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ১২০ হেক্টর, বদলগাছীতে ৫৩০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ৬৩০ হেক্টর, পত্নীতলায় পাঁচ হাজার ৮১৫ হেক্টর, ধামইরহাটে ৬৭৫ হেক্টর, সাপাহারে নয় হাজার ২৫৫ হেক্টর, পোরশায় ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর ও নিয়ামতপুরে এক হাজার ৩৮৪ হেক্টর।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাগানগুলোতে পানি সেচ এবং আমের মুকুলকে রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে কীটনাশক স্প্রেসহ বিভিন্ন পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে আমচাষিরা। একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন অঞ্চলে আমের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান তারা।
সাপাহারের কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা বলেন, ৫০ বিঘা জমি বিভিন্ন মেয়াদে লিজ নিয়ে আমবাগান করেছি। তাতে আম্রপালি, বারি ফোর, গৌড়মতি ও আশ্বিনা জাতের আম গাছ রয়েছে। গাছে আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে তাই এ সময় গাছের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন।
পত্নীতলার আমচাষি রবিউল ইসলাম বলেন, তার আমবাগানের বেশিরভাগ গাছেই মুকুল এসেছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে প্রায় সবই নতুন গাছ। ছোট-বড় আমবাগান পরিচর্যায় সময় ব্যয় করতে হয়। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য কীটনাশক স্প্রে করছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের থেকেও এবছর ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।
নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান আমের অনুকূল অবহাওয়া বিরাজ করছে। গত বছরের চেয়ে ৫২৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ বেশি হচ্ছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ্য ৭৮ হাজার মেট্টিক টন। যেখানে রয়েছে, আম রুপালী, বারী-৪, বারী-১১, ল্যাংড়া, মলিক্কা, গোপাল ভোগ, নাক ফজলি, খিরসাপাত, হাড়িভাঙ্গ, আশ্বিনাসহ প্রায় ১৬ থেকে ১৭ জাতের আম।
এছাড়াও আমের ভালো ফলন পেতে উপ সহকারী কৃষি অফিসার ও কৃষি বিভাগ আম চাষিদের সার্বক্ষণিক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
বিবার্তা/আব্দুর রাকিব/মাসুম/কেআর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]