বসন্তবরণসহ বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে ফুলবাগানে নিড়ানি, গাছের পরিচর্যা ও ফুল তোলাসহ বিভিন্ন কাজ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর ফুলচাষীরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুল উৎপাদন ভালো হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এই মৌসুমে প্রায় ১ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন চাষীরা।
সরজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের লখাইজানি, তারতা ও উল্লাসপুরে গড়ে উঠেছে ফুলের নার্সারি। গত কয়েকমাস ধরে চাষিদের পরিশ্রমে মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে নানান প্রকারের ফুল। সেখানে প্রায় ৪৫ বিঘা জমিতে গোলাপ ও গাঁদাসহ মেরিন্ডা, লিংকন, টাটা, ডিলাইট, তাজমহল, ইরানি ও থাই জাতের গোলাপ ফুলের চাষ করা হয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী বগুড়া, জয়পুরহাট ও রাজশাহী জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যায় এখানকার ফুল।
জানা যায়, সব ধরনের গোলাপ পাইকারিতে পাঁচ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। আর গাঁদা বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস ৫০ পয়সা। তবে কয়েকদিন পর গোলাপ প্রকারভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা পিস এবং গাঁদা দেড় টাকা থেকে দুই টাকা পিস বিক্রি হবে।
তারতা গ্রামের শান্তনা নার্সারির মালিক আহসান হাবিব বলেন, আমি প্রায় ২২ বছর ধরে বাগানে ফুলের চাষ করছি। ফেব্রুয়ারি মাসের কথা মাথায় রেখে আমি ফুল বাগানে গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাষ করেছি বেশি। চলতি মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
একই গ্রামের ফুল বাগানের শ্রমিক কামাল হোসেন বলেন, আমি ১০ থেকে ১২ বছর ধরে ফুল বাগানে কাজ করছি। প্রতিদিন আমি ৪০০ টাকা মুজুরি পাই, যা দিয়ে আমার সংসার চলে। আমার মতো আরো অনেকে এখানে কাজ করে, যাদের মধ্যে মহিলাও রয়েছে।
উল্লাসপুর গ্রামের নাসিম নার্সারির মলিক সেলিম জানান, প্রতি বছরের তুলনায় এবার ফুলের দাম একটু বেশি পাবো বলে আশা করছি। এই মাসে ১০ লাখ টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট আছে আমার।
শহরের গাঁজা গোলার মোড়ের ফুলপট্টির কনকচাপা ফুল ঘরের মালিক অমিত রায় বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের পর ফুলের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। বসন্তবরণে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় হলুদ রঙের গ্লাডিওলাস ও গাঁদা। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে গোলাপ আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে গাঁদা ফুল বেশি বিক্রি হয়। এখানে তিনটি ফুলের দোকান রয়েছে। ফুলের দাম ভালো থাকায় এই মাসে সবগুলো দোকান মিলিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রির আশা রয়েছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, জেলায় প্রায় পাঁচ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সময় মৌসুমি ফুলের চাষ হয়ে থাকে। জেলায় প্রতিবছরই ফুল চাষ বাড়ছে। বাড়ছে ফুলের চাহিদাও। দাম ভালো থাকায় ও ফুল চাষে লাভবান হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।
বিবার্তা/রাকিব/জামাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]