রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ায় খুশি স্থানীয়রা
শূণ্য রেখার রোহিঙ্গাদের নতুন পরিচয় ‘শরণার্থী’
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:১৫
শূণ্য রেখার রোহিঙ্গাদের নতুন পরিচয় ‘শরণার্থী’
বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দীর্ঘ পাঁচ বছর আর্ন্তজাতিক সীমারেখায় অবস্থানের পর মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের আরো একটি দলকে শরণার্থী হিসেবে ঠায় দিয়েছে রাষ্ট্র। সম্প্রতি মায়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপের জ্বালিয়ে দেওয়া শূণ্য রেখার বসতি হারিয়ে এসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকায়। এদিকে তুমব্রু এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।


রবিবার সকাল থেকে শুরু করে ৩৬ পরিবারের ১৮৪ জন এবং সোমবার ৫৩ পরিবারের ২৭৩ জনকে উখিয়া কুতুপালং আশ্রয়শিবির সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের যাচাইয়ের পর আশ্রয় শিবিরে স্থানান্তর করা হবে।


ট্রানজিট ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে যৌথভাবে কাজ করছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় ও জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।


গত দুইদিন রোহিঙ্গা স্থানান্তর বিষয়ে কক্সবাজার ও বান্দরবানের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলেও ফিরে আসতে হয়েছে ঘুমধুম ও তুমব্রু চেকপোস্ট থেকে। তুমব্রু থেকে রোহিঙ্গাদের কড়া নজরদারীতে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।


২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল ৬৩০ পরিবারের অন্তত সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা। গত পাঁচটি বছর এসব রোহিঙ্গাদের জীবন কেটেছে তুমব্রু খালের ওপারে।


আর্ন্তজাতিক সেমারেখায় অবস্থান করার সুযোগে রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটি গ্রুপ নানারকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) শূণ্য রেখায় গোপন আস্তানা গড়ে তোলে মাদকসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এদিকে আরসার এই তৎপরতা দমাতে গত ১৮ জানুয়ারি আরাকানের স্বাধীনতাকামী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।


রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, ঘটনার পরদিন আরসা শূণ্যরেখায় আশ্রয় শিবির পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার পর থেকে গত ১৭ দিন ধরে তুমব্রু এলাকায় দুটি স্কুল ও বিভিন্ন এলাকায় ২হাজার ৯৭০জন রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। যাদের মধ্যে প্রায় পৌনে চার’শ রোহিঙ্গার নিবন্ধন তথ্য পাওয়া গেছে।


ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন এলাকার মানুষের দাবী ছিল। কারণ, এসব রোহিঙ্গাদের অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। যার কারণে, এলাকার শান্তি শৃংখলা নিয়ে তাদের বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে’। এখন রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি।



এদিকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের এপারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবশেষে ঠায় হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ শরণার্থী ক্যাম্পে। তাদের এখন নতুন পরিচয় ‘শরণার্থী’।


শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, তুমব্রু থেকে আনা রোহিঙ্গাদের দুই দফায় বালুখালীর ট্রানজিট কেন্দ্রে আনা হয়েছে। ধাপে ধাপে তুমব্রু সীমান্ত থেকে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ট্রানজিট কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হবে। তুমব্রুতে কোনো রোহিঙ্গা শিবির রাখা হবে না।


বিবার্তা/নয়ন/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com