শিরোনাম
রাজধানীতে নতুন আতঙ্ক ডেঙ্গু
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২১, ০৯:৩৮
রাজধানীতে নতুন আতঙ্ক ডেঙ্গু
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

করোনা মহামারীর মধ্যেই জনজীবনে নতুন আতঙ্ক হিসেবে হয়ে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। এডিস মশাবাহিত এই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েকদিনে অনেকটাই বেড়েছে। হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি শিশুর সংখ্যা বাড়ছে; তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় রক্তের প্লাটিলেটের চাহিদা।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব মতে, শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত মাত্র একদিনে ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৫ রোগী। এটি চলতি বছর এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সারাদেশের চিকিৎসাধীন ৩৯০ রোগীর মধ্যে ৩৮৭ জনই রাজধানী ঢাকার।


ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এসব তথ্য দিয়েছে।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, এবছর ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত একহাজার ৪৭০ রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন এক হাজার ৭৭ জন। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এ বছর জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন এবং এপ্রিলে ৩ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিলো। মে মাসে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ জনে।


ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির মধ্যে জুন মাসে ২৭২ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আর ২৩ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৮ জন। শুক্রবার ঢাকার হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৮ রোগী ভর্তি আছে মিটফোর্ড হাসপাতালে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ শিশু ভর্তি আছে ঢাকা শিশু হাসপাতালে।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল কোভিড ডেডিকেটেড হওয়ায় সেখানে ডেঙ্গু রোগী নেই।


ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৮টি শিশু ভর্তি আছে। এর মধ্যে ৩ জনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শফি আহমেদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অনেক শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। যারা আসছে তাদের বেশিরভাগই ডেঙ্গু হেমোরজিক এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোম নিয়ে আসছে।


ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক জানান, এসব শিশুর প্রচণ্ড জ্বর, মাথাব্যথা, পাতলা পায়খানাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা গেছে।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ জানান, মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের খুবই সাবধানে রাখতে হবে। বাচ্চারা দিনের বেলায় ঘুমালেও মশারি টানিয়ে দিতে হবে এবং তারা যেন হাফপ্যান্ট না পরে।


জুলাই মাসে রক্তের প্লাটিলেটের চাহিদা বেশ বেড়েছে বলে জানান বিএসএমএমইউয়ের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, জুন মাস থেকেই এটা বাড়া শুরু করেছে। আগে ১০ থেকে ১২টা হতো এখন ২০ থেকে ২৫টা করে হচ্ছে। এসব বেশিরভাগই ডেঙ্গু রোগীর জন্য নেওয়া হচ্ছে।


রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের ইনচার্জ একেএম সিদ্দিকুল ইসলামও একই প্রবণতার কথা জানালেন। তিনি বলেন, মে মাসের দিকে দৈনিক গড়ে একটা প্লাটিলেটের চাহিদা থাকতো। জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ থেকে ৮টিতে। তবে জুলাইয়ে প্লাটিলেটের চাহিদা অনেক বেড়েছে।


বিবার্তা/বিআর/বিদ্যুৎ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com