শিরোনাম
চাঁদা না দেয়ায় সমাজচ্যুত ৯ পরিবার, জোটেনি কোরবানির মাংসও
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২১, ১৮:১০
চাঁদা না দেয়ায় সমাজচ্যুত ৯ পরিবার, জোটেনি কোরবানির মাংসও
বগুড়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বগুড়ার ধুনটে মসজিদ উন্নয়নের চাঁদার টাকা না দেয়ায় ৯টি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ফলে এবারের ঈদুল আজহায় এ সব পরিবারের ভাগ্যে জোটেনি কোরবানির মাংস।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েকবছর আগে ১৬৫টি পরিবার নিয়ে গঠন করা হয় মজিতলা গ্রামের একটি সমাজ। প্রতি বছর মাতব্বররা কোরবানির মাংস সমাজবদ্ধ পরিবারগুলোর মধ্যে বণ্টন করে দিতেন।


এ অবস্থায় তিন বছর আগে গ্রামের একটি জামে মসজিদ উন্নয়নের জন্য সমাজের সব পরিবারের নামে সামর্থ্য অনুযায়ী চাঁদা ধরা হয়। এর মধ্যে ৩২টি পরিবার মাতব্বরদের কথামতো চাঁদার টাকা দিতে না পারায় সমাজ থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়।


এ বছর ২৩টি পরিবার আবার নতুন করে সমাজভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ৯টি পরিবার সে সুযোগ পায়নি। ফলে এ বছর জাহাঙ্গীর আলম, ফটিক সরকার, বাবু মিয়া, সৌবার আলী, বেহুলা বেওয়া, আবুল কালাম, শহিদুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন ও হেলাল উদ্দিনের পরিবারের ৩৫ জন সদস্যর পেটে যায়নি কোরবানির এক টুকরো মাংস।


ভুক্তভোগী বেহুলা বেওয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। সমাজের মাতব্বররা মসজিদের নামে যে টাকা চাঁদা চায় আমরা তা দিতে পারি না। অল্প টাকা দিতে গেলে তারা নেয় না। এই ঘটনা নিয়ে তারা আমাদের ৯টি পরিবারে কোরবানির মাংস দেয় না।’


জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি মসজিদের চাঁদা দিয়েছি। গরিববদের নিয়ে প্রতিবাদ করায় এবছর তারা আমাকেও মাংস দেয়নি।’


এছাড়া সামাজচ্যুত অন্যান্য পরিবারগুলো জানায়, এবার কোরবানির ঈদের আগে সমাজে ফেরার জন্য মাতব্বরদের হাত-পা ধরেও কোনো প্রতিকার হয়নি। মাতব্বররা কোনো কথা শুনেননি।


ওই সমাজের প্রধান মাতব্বর মাসুদ সরকার বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর আগে মসজিদ উন্নয়নের চাঁদার টাকা না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করে ৩২টি পরিবার সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরে তারা নিজেরাই একটি সমাজ করে সেখানে পশু কোরবানি করে। এ বছর তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ হওয়ায় অনেকে বিভিন্ন সমাজে গেছে। তবে ওই ৯ পরিবার কোরবানির মাংস না পাওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই।’


উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, ‘মরিচতলা গ্রামের ৯ পরিবারের সমাজচ্যুতর বিষয়টি আগে জানা ছিল না। তবে ঈদের দিন খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই গ্রামের মাতব্বরদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমাজে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।’


ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস ছালাম বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি মীমাংসা করার দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। স্থানীয়ভাবে সমঝোতা না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


বিবার্তা/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com