লকডাউনে ফেনীর সড়কে সিএনজি চালকদের দৌরাত্মে অসহায় হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। করোনা সংকটকালীন সময়ে সিএনজি চালকদের বাড়তি ভাড়া আদায় ও ঈদ বোনাসের নামে চাঁদা আদায়ের কারণে বিপাকে যাত্রীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, দীর্ঘদিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সড়ক পুরোটাই দখলে সিএনজি অটোরিকসা। কার্যত সিএনজি চালিত আটোরিক্সার জন্য কোনো বিধিনিষেধ নেই বললেই চলে। এই সুযোগে চালকরা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে নৈরাজ্য। দিনের বেলায় নিদিষ্ট ভাড়া থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে দ্বিগুন-তিনগুন ভাড়া আদায় করছেন চালকরা।
মহিপাল থেকে দাগনভূঞা ২৫ টাকা ভাড়া হলেও ৩০-৪০ টাকা নেয়া হয়। সন্ধ্যা হলেই এই ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত হয়। ফেনী থেকে সোনাগাজীর ভাড়া ৪০ টাকা হলেও দীর্ঘদিন চালকদের ঐক্যে মতিগঞ্জ পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা। এছাড়া লালপোল থেকে ছিলোনীয়া ২০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা, ফেনী থেকে শর্শদী ২০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা, সদর হাসপাতাল মোড় থেকে ফুলগাজী ৩০ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। শহরের আভ্যন্তরীন রুটে ট্রাংক রোড় থেকে মহিপাল, শহীদ মেজর সালাহউদ্দিন মোড় ও সদর হাসপাতাল মোড়ের ভাড়া ৭ টাকা হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ টাকা আদায় করছে। সদর হাসপাতাল মোড় থেকে সালাউদ্দিন মোড় ৫ টাকা ভাড়া হলেও ১০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
ইয়াকুব নামে এক সিএনজি চালক বলেন, আপনারা নিজের পরিবারের জন্য হাজার হাজার টাকার মার্কেট করবেন আর আমরা একটু বাড়তি ভাড়া নিলেই দোষ হয়ে যায়। আমাদেরও পরিবার আছে। বাসায় বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান আছে।
সদর হাসপাতাল মোড় থেকে পরশুরাম রুটে গাড়ী চলান সিএনজি চালক বেলাল আহমেদ। পরশুরাম পর্যন্ত ১৮০ টাকার ক্ষেত্রে ভাড়া চান ৩শ টাকা। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বেশি আর এখন ভাড়া বেশি না নিলে পোষাবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বেশি। আমরা সবসময় মানুষের সেবা দিচ্ছি। এটা কেউ দেখে না, শুধু অভিযোগ আমরা ভাড়া বেশি নিই।
আব্দুল মালেক নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, আমি ট্রাংক রোড় থেকে মালপত্র নিয়ে ছাগলনাইয়া যেতে চাইলে সিএনজি চালকরা ৩শ টাকা দাবী করে। আগে ২শ টাকা দিয়ে যেতে পারতাম।
আফসার রিপন নামে এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটা শ্রেণির মানুষ আছে ৫ টাকা বা ১০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে চালকদের লোভী করে তুলেছে। আমরা মাঝখানে নিষ্পেষিত। যেন দেখার কেউ নেই।
সোনাগাজীর বাসিন্দা আবুল কাসেম ফেনী বড় বাজারের মনোহারির ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, রাতে বাড়িতে ফিরতে সিএনজিই একমাত্র মাধ্যম। সেই সুযোগে চালকেরা দ্বিগুন ভাড়া নেয়। যাত্রী ৫ জন নিলেও বাধ্য হয়ে ৭০ টাকা দিতে হয়। অথচ দিনের বেলায় ৪০ টাকা দিয়ে যাতায়াত করি।
এদিকে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী তিনজন যাত্রী নেয়ার কথা থাকলেও বরাবরের মতো ৫ জনই নেয়া হয়।
বিবার্তা/সাব্বির/এনকে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]