শিরোনাম
ঢাবির কাণ্ড, বিজ্ঞপ্তির পর জানালো লাগবে না শিক্ষক!
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:৫৪
ঢাবির কাণ্ড, বিজ্ঞপ্তির পর জানালো লাগবে না শিক্ষক!
ফাইল ছবি
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

দফায় দফায় দেয়া হয়েছে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। তবুও নিয়োগ পায়নি কেউ। বারবার স্থগিত হয়ে যাচ্ছে নিয়োগের কার্যক্রম। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উর্দু বিভাগে। চতুর্থবারের মতো বিভাগটির শিক্ষক নিয়োগের সিলেকশন বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, খুব বেশি প্রয়োজন না হওয়ায় এবং যোগ্য শিক্ষক না পাওয়ায় নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।


জানা গেছে, উর্দু বিভাগ শিক্ষক নিয়োগের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি দেয় ২০২০ সালে। এ বিজ্ঞপ্তিতে যারা আবেদন করেছে তাদের নিয়োগ বোর্ড ছিল চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর। কিন্তু হঠাৎ করে এ তারিখ স্থগিত করা হয়। এরপর আবার তারিখ নির্ধারণ করা হয় গত ২৫ নভেম্বর। কিন্তু এ তারিখের চারদিন আগে অর্থাৎ গত ২১ নভেম্বর নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের কথা বিভাগকে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


শুধু তাই নয়, এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘটেছে আরেক বিস্ময়কর ঘটনা। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এমফিল-পিএইচডিধারী প্রার্থীদের প্রাধান্য দেয়া হলেও স্থগিত হওয়া নিয়োগের সিলেকশন বোর্ডে তারাই অবমূল্যায়িত হয়েছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তারা বলছেন, তাদের উচ্চতর ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে ভাইভায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। এক্ষত্রে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।


এ বিষয়ে পিএইচডিধারী এক প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবার্তাকে বলেন, সবসময় শুনেছি, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের প্রাধান্য দেয়া হয়। অথচ আমাদের বঞ্চিত করা হলো। স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এসব হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ এ চাকরিপ্রার্থীর।


আবেদনকারী প্রার্থী ড. এ সালাম বলেন, উর্দু বিভাগের কিছু শিক্ষক কারসাজিতে জড়িত। তারা পরিকল্পিতভাবে পছন্দের প্রার্থীকে প্রথম করেন আর তাদের শিক্ষক বানাতে নানা অনিয়মের আশ্রয় নেন। এখানে শেষ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এসে উচ্চতর ডিগ্রিধারীকে প্রাধান্য না দিয়ে এসএসসি-এইচএসসি রেজাল্টকে যোগ্যতার মাপকাঠি করে পছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক করার চেষ্টা করা হয়। এটা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয় কাজ।


উর্দু বিভাগ সূত্রে জানা যায়, স্থগিত হওয়া এই শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম এরআগেও বেশ কয়েকবার স্থগিত হয়। ২০১৬ সালে এই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হলে বোর্ড কাউকে নির্বাচিত করেনি। ফলে ২০১৮ সালে আবার একই পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এবারো বাধে বিপত্তি। এবার অনেক প্রার্থী এডমিট না পেয়ে উপাচার্যকে অভিযোগ করলে তা আমলে নিয়ে তখন ওই নিয়োগকে বন্ধ করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারী কেউ নিয়োগ পায়নি।


এদিকে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের শিক্ষক প্রয়োজনের তুলনায় কম। অনেক সময় খণ্ডকালীন ও গেস্ট টিচারের মাধ্যমে তাদের ক্লাস করানো হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, খুব বেশি প্রয়োজন না হওয়ায় এবং যোগ্য শিক্ষক না পাওয়ায় নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।


২০১৬ ও ২০১৮ সালের এই বিভাগের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ বলেন, যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া প্রার্থীদের উর্দুর জ্ঞান নেই এবং তারা উর্দু বলতে পারে না, এজন্য কেউ নিয়োগ পায়নি।


বারবার নিয়োগ স্থগিতের বিষয়ে জানতে বিভাগটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বিবার্তা২৪ডটনেটের পক্ষ থেকে ফোন দেয়া হয়। বিষয়টির আঁচ করতে পেরে তিনি বলেন, আপনি অফিসে এসে যেকোন বিষয়ে আমার সাথে কথা বলেন। আমি এখন একটু ঝামেলায় আছি। শরীরও হালকা খারাপ।


এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তখন কেন শিক্ষক নেয়া হয়নি তা আমি বলতে পারবো না।


তিনি বলেন, প্রার্থীরা যদি যোগ্য না হয় তাহলে প্রার্থীদের নেয়ার সুযোগ নেই।


বিবার্তা/রাসেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com