শিরোনাম
‘ভয়ঙ্কর’ হচ্ছে সাইবার অপরাধ
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ০৮:২৮
‘ভয়ঙ্কর’ হচ্ছে সাইবার অপরাধ
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে দিন দিন বেড়েই চলছে সাইবার অপরাধ। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, স্কাইপে ভুয়া আইডি খুলে জালিয়াতি ও প্রতারণা, আইডি হ্যাক, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, অনলাইনে প্রশ্নপত্র ফাঁস, অনলাইনে জুয়া খেলা, টিকটকের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল ও মানব পাচারসহ নানা ধরনের সাইবার অপরাধ ঘটছে।


অনেক সময় অপরাধীরা হুমকি নিয়ে ভিকটিমকে ব্ল্যাকমেইল করছে। আর সবচেয়ে বড় আশঙ্কার বিষয়, এ ধরনের অপরাধে উড়তি বয়সী তরুণ-তরুণীরা বেশি জড়িয়ে পড়ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা। এমনকি সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বয়ং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হিমশিম খাচ্ছেন।


সর্বশেষ ১৫ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে টিকটক রাজ ওরফে মো. আব্দুর রাকিব ওরফে খোকন নামের এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সে ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েও টিকটকে ভিডিও তৈরি করত। পরে নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ব্ল্যাকমেইল এবং অর্থ আত্মসাৎ করত।


র‌্যাব জানায়, টিকটক ব্যবহারের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে নারীপাচার চক্রের মূল হোতা আশরাফুল মণ্ডল ওরফে বস রাফি ও তার সহযোগী ম্যাডাম সাহিদা এবং টিকটক হৃদয় বাবুর অন্যতম সহযোগী অনিকসহ বেশ কয়েকটি পাচার চক্রের মোট ৬৬ জন’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের তীক্ষ্ণ সাইবার নজরদারি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে টিকটকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতারণা, মানবপাচার ও অন্যান্য অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট রয়েছে র‌্যাব।


সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছর প্রথম ৬ মাসে ৮২৭ জন ভিকটিম শুধু সাইবার বুলিং অপরাধের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ৮ হাজার ৭৭০ জনকে অনলাইনের মাধ্যমে সাহায্য করা হয়েছে। ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন ভিকটিম সাইবার সম্পর্কিত অভিযোগ মৌখিক ও লিখিতভাবে দিচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতিদিন ৪০টির মতো অভিযোগ আসলে মাসে ১২০০ অভিযোগ পড়ছে।


ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ডিসি আ ফ ম আল কিবরিয়া বিবার্তাকে বলেন, আগে যে ধরনের অপরাধ ছিলো সেগুলো আছে। একই সাথে অপরাধীরা নতুন নতুন কৌশলেও সাইবার অপরাধ করছে। অপরাধের ধরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সাইবার বুলিং, সাইবার হ্যাকিং, ব্ল্যাকমেইল করা, ই-কর্মাসের মাধ্যমে প্রতারণা, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইনে প্রতারণা, এমএলএম কোম্পানির মাধ্যমে প্রতারণা, শিশু পর্নোগ্রাফিসহ নানা ধরনের অপরাধ বেড়েছে।


তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আমরা সাইবার অপরাধ নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু নিয়মিতই অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমাদের পাশাপাশি এ ধরনের অপরাধী নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাবও কাজ করছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি আলাদা শাখাও হয়েছে। তারাও নিয়মিত অভিযোগ পাচ্ছে। অপরাধীদের চিহিৃত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এক কথায় প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে।


অভিভাবকদের উদ্দেশে সিটিটিসির ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি অভিভাবককেই তাদের সন্তানদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে। মেয়েদের যে সাইবার বুলিং করছে; তা আমাদের আশপাশের লোকরাই করছে। সচেতনতা বাড়িয়ে এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে। এছাড়া যারা ভিকটিম হচ্ছেন; তাদেরও সচেতনতার অভাব রয়েছে। অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে; যাতে মেয়েরা অপরিচিত কারো ফাঁদে পড়ে যাতে ভিকটিম না হয়।


র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিবার্তাকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম ভার্চুয়াল জগতে ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বিভিন্ন প্রতারণা ও বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে তথ্য পায়। র‌্যাব শুধুমাত্র মাঠ পর্যায়ে নয় ভার্চুয়াল জগতেও যারা ভুয়া পরিচয় প্রদান করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রেখে চলেছে। ফলশ্রুতিতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।


বিবার্তা/খলিল/জহির/এমও

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com