শিরোনাম
সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ০৮:২০
সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

শীত আসতে আরো কিছুদিন বাকি। তারপরও রাজধানীর পাইকারী ও খুচরা বাজারগুলোতে শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে। বাজারে শীতকালীন সজবি এলেও কমছে না দাম। দিন দিন বেড়েই চলছে সবজির দাম। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১৩ ধরনের সবজির দাম। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।


বিক্রেতারা বিবার্তাকে বলেন, বর্তমানে বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি উঠছে। তাই দামও একটু বেশি। তবে শীত শুরু হয়ে গেলে এ দাম আর থাকবে না। তখন সাধারণ ক্রেতার নাগালেই থাকবে সবজির দাম।


রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, আকার ও জাত ভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পিস, ঝিঙার কেজি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা কেজি, বরবটি ৮০ টাকা কেজি, পটল ৫০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকা পিস, ঢেঁড়স ৬০ টাকা কেজি, বেগুনের আকার ও জাত ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে। ক্যাপসিকাম ২২০ টাকা কেজি, শিম ১০০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা পিস এবং লতি প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।


শুধু তাই নয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে এক লিটার ভোজ্যতেল কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা। বছরজুড়ে কিছুটা কম থাকা ব্রয়লার মুরগি এখন কিনতে হচ্ছে ১৭০ টকায়। চিনির বাজার ঠিক রাখতে সরকারের দেয়া নির্ধারিত দাম অমান্য করে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। আটা-ময়দার দামও কয়েক মাস ধরে বাড়তি। পিছিয়ে নেই চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দামও। কাঁচাবাজারে বেশিরভাগ সবজি ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। মাছের বাজারেও দামের আগুন ছড়াচ্ছে। সব মিলে প্রায় সব পেশার মানুষের মাথায় হাত। বাড়তি দরে পণ্য কিনে তারা চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন।



এদিকে, সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছর একই সময়ের তুলনায় চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, মাছ-গোশতসহ ১৭ ধরনের পণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের মধ্যে কেজিতে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ২৭ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এছাড়া মাসের ব্যবধানে বাজারে ১৩ ধরনের পণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সর্বশেষ সাত দিনের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে ১২ পণ্যের দাম বেড়েছে।


রহিম নামের এক ক্রেতা বিবার্তাকে বলেন, এখন দেশের মানুষকে বেশি দামে পণ্য কিনে খেতে হচ্ছে। বাজারে সব ধরনের পণ্য আছে তাহলে দাম এত বেশি কেন সেদিকে এবার নজর দিতে হবে। কী কারণে বাড়ছে, তা বের করে কেউ কারসাজি করলে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে ভোক্তার অবস্থা দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাবে। কারণ যে টাকা বেতন পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। পাশাপাশি প্রতিদিন যদি এভাবে পণ্যের দাম বাড়ে তাহলে কোনোভাবেই আয়ের সঙ্গে ব্যয় মানিয়ে চলা যাচ্ছে না। হতাশা ও অস্বস্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত।


তবে সিরাজ নামের এক ব্যবসায়ী বিবার্তাকে বলেন, দেশীয় কাঁচামরিচ পাওয়া যায় না। বর্তমানে কাঁচামরিচ ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে। এ জন্য কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমদানি বেশি থাকলে দাম কমে আর আমদানি কম থাকলে দাম বাড়ে। গত সপ্তাহের তুলনায় টমেটো ও কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতের সবজি কেবল বাজারে আসতে শুরু করেছে এ জন্য দাম বেশি।


এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বিবার্তাকে বলেন, জনসংখ্যা বা চাহিদা অনুপাতে পণ্যের মজুদ কেমন রাখতে হয়, কোন দেশ সেটি কিভাবে রাখে এ বিষয়ে একটি সমীক্ষা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দাম কেন বাড়তি সেদিকেও নজর দেয়া হচ্ছে।


বিবার্তা/গমেজ/আরকে/এমবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com