শিরোনাম
অক্টোবরে শুরু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধ, গুচ্ছভুক্ত ২০ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:১৭
অক্টোবরে শুরু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধ, গুচ্ছভুক্ত ২০ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভোগান্তি দূরীকরণে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছভুক্ত স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। ইতোমধো এ পরীক্ষার তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক উপস্থিতিতে ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এ ভর্তিযুদ্ধ।


মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক সভায় স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।


অনুষ্ঠিত এ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘A’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) পরীক্ষা ১৭ অক্টোবর, ‘B’ ইউনিটের (মানবিক) পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর এবং ‘C’ ইউনিটের (বাণিজ্য) পরীক্ষা ১ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।


এর আগে ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর ২০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বৈঠকে এই ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির (গুচ্ছ পদ্ধতি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে আবেদন শুরু হয় ১ এপ্রিল ২০২১ আর শেষ হয় ২৫ জুন ২০২১।


জানা গেছে, গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।


ভর্তি কমিটি সূত্রে জানা যায়, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে মোট ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪০৬ শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে আবেদন করে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪১, মানবিক বিভাগে ১ লাখ ৭ হাজার ৯৩৩ এবং বাণিজ্য বিভাগে ৫৮ হাজার ৬৩২ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর তিনটি বিভাগে প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। যারা ২০ টি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ হাজার আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নেবেন।


কমিটি আরো জানায়, গুচ্ছভুক্ত কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোন ইউনিটে ভর্তি হতে হলে প্রার্থীকে দুটি ধাপে উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রথম ধাপ হলো প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়া, অন্যটি ভর্তি পরীক্ষা। গুচ্ছ প্রক্রিয়ার এই ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী একটি বিভাগে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলে যোগ্যতা ও আসন অনুযায়ী যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন।


গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কামালউদ্দীন আহমেদ বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীর পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবেন।


তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমে আসবে। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে।


গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমদ নূর বলেন, শিক্ষার্থীদের চয়েজ অনুসারে পয়েন্ট সিস্টেমের মধ্য দিয়ে যারা যে কেন্দ্র পাবে, তাদের জন্য সে কেন্দ্র নির্ধারণ করবো। কেন্দ্রের নাম এডমিট কার্ডে লেখা থাকবে।


তিনি বলেন, গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্যাদি ওয়েবসাইটে (www.gstadmission.ac.bd) পাওয়া যাবে। উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসের আলোকেই ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে জানান তিনি।


বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভোগান্তি দূরীকরণে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তি করানোর এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষার্থী - অভিভাবকরা স্বাগত জানালেও এ প্রক্রিয়ায় D ইউনিট অর্থাৎ বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট না থাকায় তাদের মাঝে শঙ্কাও রয়েছে। এ দাবিতে শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে গুচ্ছ ভর্তি কমিটির কাছে D ইউনিট করার বারবার দাবিও জানিয়েছে। এ নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রীটও চলমান রয়েছে।


এদিকে উল্লেখিত ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় আসলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাকী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ প্রক্রিয়ায় আসেনি। নিজ নিজ নিয়ম অনুসরণ করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা জানিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে তারিখও ঘোষণা করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী ১ অক্টোবর, ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২ অক্টোবর, ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২২ অক্টোবর, ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৩ অক্টোবর এবং ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এসব পরীক্ষা দেশের ৮টি বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর, বরিশাল এবং ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হবে।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৭ নভেম্বর থেকে শুরু হবে। ৭-১৮ নভেম্বরের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা আয়োজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ‘বি’ ইউনিট, ২৯ অক্টোবর ‘সি’ ইউনিট, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর ‘ডি’ ইউনিট ও ১ ও ২ নভেম্বর ‘এ’ ইউনিট পরীক্ষা। এছাড়া ৫ নভেম্বর উপ-ইউনিট ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। আগামী ৪ অক্টোবর ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় দিন ৫ অক্টোবর ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষাও তিনটি শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী ৬ অক্টোবর ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।


বিবার্তা/রাসেল/গমেজ/শাহিন/এমও

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com