মেহমানের খাতির কত দিন?
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৭
মেহমানের খাতির কত দিন?
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মেহমানদারি নবীজির সুন্নাত। আল্লাহর নবী হযরত ইবরাহিম আ. সর্বপ্রথম পৃথিবীতে মেহমানদারির প্রথা চালু করেন। আতিয়্যা আওফি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রসুল সা.-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহিম আ.-কে এ কারণে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন, তিনি মানুষকে খানা খাওয়াতেন, বেশি বেশি সালাম দিতেন আর মানুষ রাতে ঘুমিয়ে পড়লে তিনি নামাজ আদায় করতেন। (তাম্বিহুল গাফিলিন)


নবীজি সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানের সমাদর করে।’ (বুখারি ৬১৩৬) অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘যে মেহমানদারি করে না, তার মাঝে কোনো কল্যাণ নেই।’ (মুসনাদে আহমদ ১৭৪১৯) আরেক হাদিসে নবী কারিম সা. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা.-কে লক্ষ্য করে বলেন, নিশ্চয়ই তোমার ওপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।’ (বুখারি ৬১৩৪)


মেহমান তিন দিনের বেশি মেহমান হয়ে কোথাও গিয়ে থাকা উচিত নয়। উচিত নয় মেজহবানকে গুনাহে অথবা কষ্টে ফেলা। মহানবী সা. বলেন, ‘মেহমানের পারিতোষিক হল এক দিন-রাত। মেহমান নাওয়াযি তিন দিন। আর তার বেশি হল সদকাহ স্বরূপ।
কোন মুসলিমের জন্য তার ভায়ের নিকট এতটা থাকা বৈধ নয়, যাতে সে তাকে গুনাহগার করে ফেলে।’ লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রসুল! তাকে কিভাবে গুনাহগার করে ফেলে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘মেহমান তার কাছে থেকে যায়, অথচ মেজবানের এমন কিছু থাকে না, যার মাধ্যমে সে মেহমানের খাতির করতে পারে।’ (বুখারি ৬১৩৫, মুসলিম ৪৪০৬)
অনেক অকর্মণ্য, বেকার ও কুঁড়ে লোক অযাচিত মেহমান হয়ে আত্মীয়, বিয়াই বা বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে মেহমানী করে বেড়াতে ভালোবাসে। তিন দিনের বেশি বসে বসে সদকা খেতে আনন্দবোধ করে। কিন্তু সে এতটুকু অনুভব করতে পারে না যে, তার জন্য মেজবান কষ্ট পাচ্ছে। ভালো খাবার ও শোবার জায়গার ব্যবস্থা করতে তাকে বেগ পেতে হচ্ছে। বদনামের ভয়ে সে হয়তো ঋণ করেও মাছ-মুরগী-ডিম যোগাড় করে তার খাতির করে যাচ্ছে।
মনে মনে মেজবান ও তার বাড়ির লোক তার প্রতি বিরক্ত হয়ে যায়। আর এ সবের ফলে তার সওয়াব বাতিল, বরং উল্টে সে গুনাহের শিকার হয়। কষ্ট হয় অথচ তার ফলও মিলে না। অবশ্যই মেজবান যদি সত্যই মন থেকে মেহমান কে থাকতে ও বেড়াতে বলে, সে ক্ষেত্রে তিনদিনের বেশি থাকায় দোষ নেই। তবুও মেহমানের উচিত তিন দিনের বেশি মেহমান না হওয়া।
এ হাদিস থেকে বুঝা যায়, মেজবানের উচিত, মেহমান এলে প্রথম একদিন ও একরাত তার ভালোভাবে খাতির করা, পরের দুইদিন স্বাভাবিক খাতির করা। তারপরেও মেহমান থেকে গেলে তাকে সাধারণ খাবার দেয়া। তার প্রতি বিরক্ত না হওয়া। কারণ, তাতে সে সদকার সওয়াব অর্জন করতে থাকবে।


অনেকের মতে মেহমান এসে থেকে গেলে তার খাতির তিনদিন করা জরুরি। তারপর জরুরি নয়, সদকাহ। আর মেহমান এসে না থাকলে তার পাথেয় এতটা পরিমাণ খাবার সাথে দিয়ে দিতে হবে, যাতে সে রাস্তায় পথ চলার জন্য যথেষ্ট হয়।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com