প্রতিদিনই দেশে বৈষম্য বাড়ছে: জিএম কাদের
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৫৭
প্রতিদিনই দেশে বৈষম্য বাড়ছে: জিএম কাদের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিরোধীদল নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সরকারের সাথে কিছু লোক আইনের ঊর্ধ্বে অবস্থান করছে। সাধারণ মানুষের ধারণা, বর্তমান সময়ে দুষ্টের পালন ও শিষ্টের দমন হচ্ছে। প্রতিদিনই দেশে বৈষম্য বাড়ছে, সরকারিভাবেই বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে।


২ এপ্রিল, মঙ্গলবার বিকেলে আইডিইবি মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির পরিচিতি সভা ও ইফতারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।


জিএম কাদের বলেন, আইনের শাসনের মধ্যে দুটি প্রধান বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এরমধ্যে আইনের চোখে সবাই সমান ও শিষ্টের পালন এবং দুষ্টের দমন। সরকারি দলের মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্নভাবে বিচার বা শাস্তি এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক। এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো মামলা কী হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে? সরকার পরাজিত হতে চাননি কিন্তু মামলায় সরকার পরাজিত হয়েছেন এমন ঘটনা কী ঘটেছে? আমার জানা নেই। যাকেই জিজ্ঞাসা করেছি কেউ বলতে পারেনি। অনেকেই বলেছে হয়নি।


তিনি আরও বলেন, সুবিধাবাদী একটি গোষ্ঠীকে নিয়ে সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তৈরি করা হচ্ছে। তারা সরকারের সমর্থন করছে এবং ক্ষমতার প্রভাবে জনগণের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন করছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা না হলে সুশাসন আশা করা যায় না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণই দেশের মালিক, জনগণই শাসক নির্বাচন করবে ও পরিবর্তন করবে। এমন অবস্থায় আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এটা নিশ্চিত করা যায় এবং বৈষম্যহীন সমাজও প্রতিষ্ঠা করা যায়।


জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে জবাবদিহিতা থাকে। কেউ ইচ্ছা করলেই জবাবদিহিতা এড়িয়ে নিজস্ব বা গোষ্ঠী স্বার্থ উদ্ধার করতে পারে না। জবাবদিহিতার কারণেই দুর্নীতি ও দুঃশাসন কায়েম হতে পারে না। গণতান্ত্রিক সমাজে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আমরা এমন একটি গণতান্ত্রিক সমাজ কামনা করছি।


তিনি বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়েছেন ৫৬ হাজার ৬৬ জন। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬০৪ জন বাংলাদেশি। বিশেষ বিবেচনায় বৈধভাবে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এমন বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে ১৭ প্রতিষ্ঠান। তবে এরপর থেকে ডলার-সংকটের কারণে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে অনুমোদন পেয়েছে পাঁচটি কোম্পানি। তবে বিদেশে দ্বিতীয় নিবাস গড়ার জন্য কাউকে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাহলে বাংলাদেশিরা কীভাবে মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়ল। কীভাবে টাকা নিয়ে গেলো।


দেড় লাখ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার ইতোমধ্যেই অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। ১০ বছর মেয়াদি ক্রয়কৃত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ৫ বছরেই শেষ। বাকি ৪০ হাজার ভোটিং মেশিনও অকেজো হওয়ার পথে। বেশির ভাগ ইভিএমেই এখন অকেজো। শেষ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের অধীন কেনা ইভিএম সম্পদের বিলুপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। সরকার যে অর্থ ব্যয় করে, তা হচ্ছে সাধারণ মানুষের অর্থ। অর্থ ব্যবহারে ব্যাপকভাবে দুর্নীতি ও অপচয় করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা জার্মানির তৈরি দুটি পাইপ কাটারের দাম দেখানো হয়েছে ৯২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। একইভাবে জার্মান কোম্পানির দুটি হাতুড়ির দাম দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এসব পণ্যের এমন অস্বাভাবিক দাম দেখে চালানটি আটকে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তারপর এসব পণ্য আমদানিকারক সিপিজিসিবিএল ও পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, শুধু এই দুটি পণ্য নয়, এই চালানের ১৯টি পণ্যই অযৌক্তিক উচ্চমূল্যে আমদানি করা হয়েছে।


জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির ভাইস-চেয়ারম্যান এইচ এম শাহারিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, ড.নূরুল আজাহার শামীম,নুরুল ইসলাম তালুকদার, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস-চেয়ারম্যান সফিউল্লাহ শফি, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মো. বেলাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী, সম্পাদক মণ্ডলের সদস্য- এম এ রাজ্জাক খান, মো. মিজানুর রহমান মিরু প্রমুখ।


অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com