‘বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাঠে নেমেছে, এদেরকে পর্যদুস্ত করতে হবে’
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:২৫
‘বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাঠে নেমেছে, এদেরকে পর্যদুস্ত করতে হবে’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৫ আগস্ট আমাদের পরাজয়ের দিন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। আমাদের আনন্দের দিনগুলো ধরে রাখতে পারিনি। ১৯৮১ বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রত্যাবর্তন হয়েছে। এখন বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী শক্তি মাঠে নেমেছে। এদেরকে পরাজিত পর্যদুস্ত করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের কাছে সোনার দেশের ক্ষমতার মঞ্চ ফিরিয়ে দিবো এটা হতে পারে না।


মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ১০ তারিখ নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলো। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে পরে চলে গেলো গোলাপবাগে। তাদের সাথে জুটে গেছে অতি বাম, অতি ডান। সব অতিরা এক জায়গায় হয়ে গেছে। আমাদেরকে নাকি ক্ষমতা থেকে উৎখাত করবে। আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। আওয়ামী লীগকে উৎখাত এতো সহজ নয়।


শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আগে ২৯ বছর জিয়া, এরশাদ, খালেদা ক্ষমতায় ছিলো। তারা কেন দেশকে উন্নত করতে পারেনি। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে। ওদের জন্ম গণতন্ত্র থেকে হয়নি। মিলিটিারি ডিকটেটরের পকেট থেকে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে হয়েছে। এদের বাংলাদেশের প্রতি কেন দরদ থাকবে। হাজার হাজার মানুষ পুড়িয়ে তারা আনন্দ পায়।


আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীবাদী শক্তি মাঠে নেমেছে। এদেরকে পরাজিত পর্যদুস্ত করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের কাছে সোনার দেশের ক্ষমতার মঞ্চ ফিরিয়ে দিবো এটা হতে পারে না, হতে দিব না।


তিনি বলেন, বাংলাদেশে দু’জন মানুষ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। একজনকে রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য আর আরেকজনকে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। দিস ল্যাগাসি নেভার ডাই। শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম করছেন। বাংলাদেশেকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।


ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষের কাছে অবশ্যই আমাদের অঙ্গীকার আছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতেই হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আদর্শ রাষ্ট্র গড়তে হবে। আইডিয়াল স্টেট গড়তে হবে। মুক্তির কান্ডারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো। সেটাই আমাদের শপথ।


আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৫ আগস্ট আমাদের পরাজয়ের দিন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। আমাদের আনন্দের দিনগুলো ধরে রাখতে পারিনি। ১৯৮১ বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রত্যাবর্তন হয়েছে।


তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ভোটের মাধ্যমে কখনো পরাজিত করা যায়নি। আওয়ামী লীগ সবসময় ষড়যন্ত্র, চক্রান্তের কাছে পরাজিত হয়েছে। কখনো জনগণের ভোটে পরাজিত হয়নি। যারা চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রকারী তাদের প্রতি আমরা মানবিকতা, উদারতা দেখিয়েছি। তাদেরকে চক্রান্তের সুযোগ দিয়েছি। উদরতা, মানবিকতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। না হলে আমরা আবার মুখ থুবড়ে পড়ে যাবো।


আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর কাছে ঋণী। আমাদের সুন্দর জাতীয় সংগীত দিয়েছেন। এক বছরে সংবিধান দেয়ার জন্য আমরা তার কাছে ঋণী। নারীর অধিকারের বীজ বপন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পিতা দিয়েছেন স্বাধীন স্বদেশ, কন্যা দিয়েছেন উন্নত বাংলাদেশ।


আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামন্ডলীর সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ফারজানা ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়বার তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেই সোনার বাংলা কেবল সোনালি ফসলের বাংলা নয়। সোনার মানুষের বাংলা। ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক, সমাজতান্ত্রিক চিন্তা চেতনায় উদ্বুদ্ধ মানুষ। যে মানুষ প্রাণ দিয়ে বাংলাকে ভালোবাসে সেই মানুষ। সেই মানুষের মধ্যে যদি ভেজাল থাকে তাহলে বড় নৌকা হলেও তাদের জায়গা দেয়ার দরকার নেই। সোনার বাংলার অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। এবার দরকার সোনার মানুষ তৈরি করা। বঙ্গবন্ধুর আশির্বাদ মাথায় নিয়ে আমরা সেই মানুষ তৈরি করব।


অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে ধ্রুবতারা হয়ে আছেন। তার স্বপ্ন সরাথি শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েচিলেন যা বাস্তাবায়িত হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ হবে বিজ্ঞানমন্সক, কুসংস্কার মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শত শত বই লেখা হয়েছে তবে এতে মৌলিকত্বের অভাব রয়েছে। এই মুহূর্তে প্রয়োজন নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য জীবনী। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বক্তব্যের সংকলন প্রয়োজন।


বিবার্তা/সোহেল/বিএম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com