শিরোনাম
ইউপি নির্বাচন: অগ্রাধিকার পাবেন করোনায় মাঠে থাকা প্রার্থীরা
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:০৮
ইউপি নির্বাচন: অগ্রাধিকার পাবেন করোনায় মাঠে থাকা প্রার্থীরা
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। করোনা পরিস্থিতিতে স্থগিত হওয়া এসব ইউপি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রতীকে হতে যাওয়া এ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন লাভের আশায় ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীক ‌‌‘নৌকা’ পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তারা।


আওয়ামী লীগে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীর অভাব নেই। তাই দলের ত্যাগী, যোগ্য ও নিবেদিত নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো নেতাদের দেয়া হবে অগ্রাধিকার। বাদ যাবেন আগের নির্বাচনগুলোতে বিদ্রোহী প্রার্থী বা তাদের হয়ে কাজ করেছেন এমন প্রার্থী এবং বিতর্কিতরা।


গত ৯ সেপ্টেম্বর গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তৃণমূল গুছিয়ে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে তৃণমূল গুছাতে ইউপি নির্বাচনকে দারুণ সুযোগ হিসেবেই দেখছেন দলের নেতারা। পৌর নির্বাচনের মতো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান তারা।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা না হলেও শিগগিরই শুরু হবে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া। দলীয় টিম ও বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থী খোঁজা হবে। ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীর হাতেই ইউপিতে নৌকা তুলে দিতে চায় দলের নীতিনির্ধারণী মহল। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের রেজুলেশন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশনা দেবে আওয়ামী লীগ। প্রার্থী প্যানেল তৈরির ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে গঠনতন্ত্রের ২৮(৩) ধারা অনুযায়ী ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের পরামর্শ গ্রহণপূর্বক কমপক্ষে তিনজনের একটি প্যানেল প্রস্তাব করার কথা বলা হবে।


সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ২৮(৩)(ঙ) অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীদের প্যানেল তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করবে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থীদের একটি প্যানেল সুপারিশের জন্য কেন্দ্রে পাঠাবে। প্যানেলটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের (মোট ৬ জন) যুক্ত স্বাক্ষরে সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে দলের ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ের দফতর বিভাগে জমা দিতে হবে।


এছাড়া নির্বাচনী আইন, নীতিমালা ও বিধিমালা অনুযায়ী প্রস্তাবিত প্রার্থীদের নামের (জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী) সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে হবে। প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং রাজনৈতিক পরিচিতি সংবলিত একটি সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত অবশ্যই পাঠাতে হবে।


এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে তোড়জোড় করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের সমর্থন পেতেও শুরু করেছেন যোগাযোগ। অনেকেই ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছেন ডিজিটাল প্রচারণা।


আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বিবার্তাকে বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা সবসময় সকল ধরনের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকি এবং আছিও। করোনা থাকলেও আমাদের নেতা-কর্মীরা আরো বেশি করে মানুষকে সেবা দিয়েছে। আমাদের অবস্থান আগের চেয়ে ভালো কারণ আমরা করোনায় জনগণের পাশে ছিলাম। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছি। প্রয়োজনে নেতা-কর্মীরা ধান কেটে দিয়েছে, কেউ মারা গেলে সৎকারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি।


তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন বা বিদ্রোহীদের সমর্থক ছিলেন এরকম প্রার্থীদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না। যারা দলের বিপক্ষে কাজ করে তারা দলের মনোনয়ন পাবে না। দলের ত্যাগী ও যোগ্যদের মনোনয়ন দেয়া হবে। মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।


জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিবার্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। নির্বাচন নিয়ে আমাদের নিজস্ব একটা প্রস্তুতি থাকে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, জনমত তৈরি করা ও বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে নিয়ে আমরা কাজ করি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দল থেকে বিতর্কিত, বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। যারা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, দলের জন্য ত্যাগী তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে। কারণ জনগণের আস্থাই আমাদের একমাত্র শক্তি, এর ওপর ভর করেই আওয়ামী লীগ চলে।


এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল বিবার্তাকে বলেন, নির্বাচন করতে হলে মানুষের কাছে থাকতে হয়। আমরা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করি। আমরা সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকি। করোনায় কারা মাঠে ছিলো আর কারা ছিলো না এর রিপোর্ট আসবে। যাদের রিপোর্ট ভালো তাদেরকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা বিবেচনা করবেন।


বিবার্তা/সোহেল/গমেজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com