শিরোনাম
ভাগাভাগিতে সুপার ইউনিটে বাদ পড়ছেন ছাত্রদলের ত্যাগীরা
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২১, ১০:৪৩
ভাগাভাগিতে সুপার ইউনিটে বাদ পড়ছেন ছাত্রদলের ত্যাগীরা
জাহিদ বিপ্লব
প্রিন্ট অ-অ+

বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে দাবি আদায়ের সকল আন্দোলনের সম্মুখসারিতে ছিলেন এই ছাত্রসংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তবে বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রমে শৃঙ্খলা-পতন ঘটেছে। সামনে আসছে না আগের সেই যোগ্য নেতৃত্ব। ভাগাভাগিতে সুপার ইউনিটে বাদ পড়ছেন ছাত্রদলের যোগ্য ও ত্যাগীরা।


নেতাকর্মীরা বলছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে ছাত্রদলের যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাদের খুঁজে বের করতে ১০টি সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়। এই টিমের কাজ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মহানগর, জেলা ও উপজেলায় গিয়ে খুঁজে খুঁজে যোগ্য নেতৃত্ব সুপারিশ করা। এরপর কেন্দ্র তার অনুমোদন দেবে।


মহানগরের পর এখন তোড়জোড় শুরু হয়েছে ঢাকার সুপার ইউনিট খ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট গঠন নিয়ে।


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে কাজী জিয়াউদ্দিন বাসেতের নাম। সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে তার। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসারের অনুসারী। গ্রুপ রাজনীতি করার কারণে তারও কিছু লোকবল রয়েছে।


বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে আরেফিন সিদ্দিককে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শক্ত কোনো গ্রুপ না থাকলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক এক সভাপতি তাকে সমর্থন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আহ্বায়কের যে নেতৃত্বগুন থাকা প্রয়োজন সেখানে রয়েছে দুর্বলতা। এছাড়া প্রার্থী রয়েছেন মেহেদী হাসান হিমেল। সাবেক সাংগঠনিক আনিসুর রহমান খোকনের অনুসারী। তার মামলা এবং কারাগারে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।


সদস্য সচিব হিসেবে এককভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে মো. মোস্তাফিজুর রহমান রুমীকে। বিভিন্ন কর্মসূচি সম্মুখ সারিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ৬ বার গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে। সাংগঠনিক যোগ্যতা ও সাধারণ ছাত্রদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার। সবচেয়ে বেশি লোকবলও থাকায় ক্যাম্পাসেওনপ্রভাব বিস্তার করার সক্ষমতা দেখিয়েছেন বারবার। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে দলের পক্ষে নিজের অনুসারীদের নিয়ে সার্বক্ষণিক মাঠে ছিলেন তিনি।


ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কলেজগুলোর কমিটি গঠন প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বিবার্তাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই দেয়ার চেষ্টা করছি। আমরা যাচাই-বাছাই করে যারা ত্যাগী তাদেরকে মূল্যায়িত করবো।


তিনি বলেন, যারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজপথে সরব ছিল এবং সংগঠনের ডাকা কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে মূল নেতৃত্বে তাদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হবে।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়


আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আহ্বায়ক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে সাবেক সহ-সভাপতি ফয়সাল হোসেনকে। বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবরকে। দুজনেই ৩৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী।


বিশ্ববিদ্যালয় হলের রাজনীতিতে থেকে সক্রিয় ফয়সাল। সাংগঠনিক দক্ষতাও রয়েছে তার। লোকাল রাজনীতিবিদরাও তাঁর জন্য সুপারিশ করছে কেন্দ্রকে। অন্যদিকে জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবরকে সমর্থন দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক শীর্ষনেতা। সদস্য সচিব হিসেবে বেশ কয়েকজন প্রার্থী রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ওয়াসিম আহমেদ অনিক, হুমায়ুন কবির হিরন, মেহেদী হাসান ও ইস্রাফিল চৌধুরী সোহেল।


সরকারি তিতুমীর কলেজ


রাজধানীর কলেজ শাখার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তিতুমীর কলেজ। ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির সুপারিশ দেয়া হয়েছে। এই ইউনিটে মাহফুজুর রহমান লিপকনকে আহ্বায়ক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। সাংগঠনিক ক্যাপাবিলিটি কম থাকলেও সাংগঠনিক টিম প্রধান হাফিজুর রহমানের অনুসারি হওয়ায় আহ্বায়কের সুপারিশ পেয়েছে। ৭ তলা বস্তি ও বেল তলা বস্তি থেকে বহিরাগত লোক এনে কর্মসূচি পালন করেন বলে লিপকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার হয়েছিলেন একবার।


নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক ক্যাবাবিলিটি থাকা সত্ত্বেও আহ্বায়কের পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে আরিফুর রহমান এমদাদ আরিফকে। বর্তমানে যুগ্ম সাধারণ পদে আছেন। কলেজে থাকা অবস্থায় ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক ছিলেন। তিতুমীর কলেজে সবচেয়ে বেশি জনশক্তি তার সাথে রাজনীতি করেন। ৩টি মামলারে পাশাপাশি জেল খাটার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। তৃণমূল থেকে উঠে আসা আরিফকে ১ নং যুগ্ম আহ্বায়ক করার সুপারিশ করেছে সাংগঠনিক টিম। এছাড়া আহ্বায়ক প্রার্থী মাসুদ রানা রিয়াজকে এক নং সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, ৭/৮টা মামলা থাকলেও তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা কম।


সদস্য সচিব হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে আকরাম খানকে। ২০১০-১১ সেশনে ভর্তি হয় তিতুমীর কলেজে। নেতাকর্মীরা বলছেন, তার অরগানাইজিং পাওয়ার ভালো। জনশক্তিও রয়েছে তাঁর। বর্তমান কমিটির সবশেষ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। নেতাকর্মীরা তাকে কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুসারি হিসেবে জানেন। বিকল্প সদস্য সচিব হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে কাজী সাইফুল ইসলামকে। ২০১৬ সালে রাজনীতির সংগে যুক্ত হন। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাঁর জনশক্তি সাইফুলের সঙ্গে কাজ করেন। বায়জিদ মোস্তাকিমও সদস্য সচিব প্রার্থী ছিলেন। তারও সাংগঠনিক যোগ্যতা নেতৃত্ব গুনাগুনও রয়েছে। কারানির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মামলাও রয়েছে একাধিক। তাকে ৬ নং যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত জসীম মুন্সিকে রাখা হয়েছে ২ নং আহ্বায়ক হিসেবে।


প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়


রাজিবুল ইসলাম বিন্দুকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আহ্বায়ক করার প্রস্তাব করেছে সাংগঠনিক টিম। বর্তমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সম্পাদক এবং অতীশ দীটঙ্কর এর সভাপতি। সাংগঠনিকভাবে ক্যাপাবল তিনি। এছাড়া রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু হোরায়রা। তার বিরুদ্ধে চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতির অনুসারি বলে পরিচিত।


সদস্য সচিব হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে জহিরুল হক সায়মনের নাম। বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সম্পাদক। নেতাকর্মীরা বলছেন, সাংগঠনিক দক্ষতা ও নেতৃত্ব গুন রয়েছে তার। এছাড়া মো মুরসালিনের নাম শোনা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় না। তাঁর বিষয়ে অনেকেই বলছেন, ঢাকা জজ কোর্টে নিয়মিত প্রাকটিস করেন। বেগম জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসের অনুসারি বলে পরিচিত।


ঢাকা কলেজ


রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপ–ইউনিট ঢাকা কলেজ। এখানে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি প্রস্তাব করেছে সাংগঠনিক টিম।


আহ্বায়ক হিসেবে প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছে হাসিবুল হাসান সজিবকে। বিকল্প রয়েছে শাহিনুর রহমান শাহিনের নাম। তথ্য যাচাইয়ে দেখা গেছে, হাসিবুর রহমান হাসিব সরাসরি ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলেন না। ২০১১ সালের শেষের দিকে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে ঢাকা কলেজে এসেছেন। গ্রুপ রাজনীতিতে তিনি বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমের রাজনীতি করেন। কলেজ রাজনীতিতে তার ম্যানপাওয়ারও কম। এছাড়া ২০১৩, ১৪, ১৫ এর আন্দোলনে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল না বলে জানা গেছে।


শাহিনুর রহমান শাহিন ০৭-০৮ সেশনে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। বর্তমান ঢাউস কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ পদ রয়েছে তার। দলের সকল রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। গ্রুপ রাজনীতিতে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্রাবণের অনুসারী। কলেজ রাজনীতিতে যেমন জনশক্তি রয়েছে, তেমন ত্যাগও রয়েছে তার। যোগ্য হলেও বিকল্প হিসেবে তার নাম রাখা হয়েছে।


এছাড়া আহ্বায়ক হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন হায়াত মাহমুদ জুয়েল। সুদর্শন এবং দলের জন্য ত্যাগ রয়েছে তারও। নোয়াখালী অঞ্চলের বেশিরভাগ ছাত্রদল নেতা তার সাথে সক্রিয়।


সদস্য সচিব হিসেবে টিম প্রস্তাব করেছে দেলোয়ার হোসেন রাসেলকে। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামলের অনুসারী। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গালিবের অনুসারী হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। গালিব ও তারেক দুই গ্রুপের হল দখল নিয়ে গোলাগুলির পর গালিব গ্রেফতার হলে ছাত্রলীগ থেকে নিস্ক্রীয় হয়ে পড়ে রাসেল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ছাত্রলীগ নেতা গালিব আর রাসেলের বাড়ি পাবনায়।


বিকল্প সদস্য সচিব হিসেবে প্রস্তাবনায় রাখা হয়েছে মামুনুর রহমান মামুনকে। বর্তমান কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক। অনেকদিন ধরেই রাজনীতি রয়েছেন। দলীয় কর্মসূচিতেও তার অংশগ্রহণ রয়েছে। গ্রুপ রাজনীতি করার কারনে জনশক্তিও রয়েছে।


প্রস্তাবনার বাইরে সদস্য সচিব প্রার্থী হয়েছেন মৃধা জুলহাস। বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আগের মামুন-মিঠু কমিটিরও সদস্য ছিলেন তিনি। ১৩, ১৪ ও ১৫ সালের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে ঢাবির বিএনসিসি গেট থেকে আটক হন। বেশ কয়েকদিন গুম ছিলেন। পরে প্রায় এক বছর জেল খেটে মুক্তি পান। জনশক্তিও রয়েছে তার। সাংগঠনিক দক্ষতাও রয়েছে জুলহাসের।


তেজগাঁও কলেজ


তেজগাঁও কলেজে আহ্বায়ক হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে সোহেল রানাকে। বর্তমানে কলেজ শাখার ৩ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তেজগাঁও কলেজ শাখার সভাপতি মিজানুর রহমান রাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। মাইনুদ্দিন জুয়েল আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। তাকে প্রস্তাব


করা হয়েছে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হবার। তিনি বিবাহিত। স্ত্রীর নাম রিদনা আক্তার। তিনি প্রবাসী হলেও এখন দেশে অবস্থান করছেন। সাকিব হোসেন সম্রাট। বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। টিম তাকে যুগ্ম আহ্বায়কের প্রস্তাব করেছে।


সদস্য সচিব হিসেবে টিম প্রস্তাব করেছে বেলাল হোসেন খান ও ইয়াসিন ভূইয়াকে। এরমধ্যে বেলাল ১৩, ১৪ ও ১৫ সালের অন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। ১৫ সালের মার্চে লালবাগে আটক করা হয় তাকে। এরপর থেকে গুম ছিলেন। গ্রেফতার দেখানোর পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় প্রায় দুই বছর কারাবরণ করেন। গুম থাকা অবস্থায় তার উপর অমানসিক নির্যাতন করা হয়। ডান হাতের সবগুলো নক উপড়ে ফেলা হয়েছে। ডান হাটুর বাটি এবং বাম কানে এখনও ক্ষত রয়েছে।


ইয়াসিন ভুইয়া ছিলেন তেজগাঁও কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। পরে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। তেজগাঁও কলেজের অনার্সের যে বায়োডাটা কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন সেই রোল নম্বর ভুয়া। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ওই রোল নম্বর এক মেয়ে শিক্ষার্থীর। ছাত্রদলের এক প্রভাবশালী নেতার প্ররোচনায় এই জালিয়াতির আশ্রয় নেন ইয়াসিন। কলেজের সর্বোচ্চ নির্যাতনের শিকার বেলালকে বাদ দেয়ার জন্য কাজ করছে ছাত্রদলের সেই শীর্ষনেতার বলয়।


বাঙলা কলেজ


সরকারি বাঙলা কলেজে আহ্বায়ক হিসেবে টিম প্রস্তাব করেছে প্রদীপ কুমার হালদারকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি অনার্সের শিক্ষার্থী নন। ডিগ্রি করছেন বাঙলা কলেজে। লিওন ফার্মায় চাকরি করেছেন তিনি। ওই ওষুধ কোম্পানির ম্যানেজার আফজালুর রহমান ২ লাখ টাকার চেক প্রতারণার একটি মামলা করেছে তার বিরুদ্ধে। চাকরির কারণে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ কম নিতেন।


২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহীম হোসেন বিপ্লব আহ্বায়ক প্রার্থী। বাংলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া অবস্থায় ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। সাংগঠনিক ও নেতৃত্বে তার দক্ষতার কথা বলেছেন নেতাকর্মীরা।


সদস্য সচিব হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে মোখলেছুর রহমানকে। বর্তমান কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ পদ রয়েছে তার। এছাড়া রয়েছেন তরিকুল ইসলাম তারেক। তিনি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।


কবি নজরুল কলেজ


মো. সাইয়্যেদুর রহমান সাঈদকে আহ্বায়ক হিসেবে প্রস্তাব করেছে টিম। বিকল্প রাখা হয়েছে খন্দকার ইরফান আহমেদ ফাহিমকে। সাঈদের সেশন ২০০৮-২০০৯। কবি নজরুল কলেজের অনার্স রেগুলার শিক্ষার্থী। দলের সবগুলো আন্দোলনেই সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে তার। কলেজে সবগ্রুপের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতাও সবচেয়ে বেশি। কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মামলার শিকার ও গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। জনশক্তিও তার বেশি। সাংগঠনিক ও নেতৃত্বে ক্যাপাবল (ইঞ্জিনিয়ার ইশরাকের অনুসারী)।


ফাহিমের সেশন ২০১৩-১৪। মুলত কবি নজরুল কলেজের প্রাইভেট কোর্স ডিগ্রির শিক্ষার্থী তিনি। নোয়াখালী অঞ্চলের একটা অংশ তার সাথে কাজ করে। কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছেন তিনি। মো. সাইয়্যেদুর রহমান সাঈদের থেকে ৫ বছরের জুনিয়র। জনশক্তিও সাঈদের থেকে কম। তিনিও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাকের অনুসারী।


প্রস্তাবিত এর বাইরেও আহ্বায়ক প্রার্থী রয়েছে মুজিবুল হক রিপন, শামীম হোসেন, কাওসার হোসেন। সদস্য সচিব হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে সিরাজুল ইসলামকে। ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী তিনি। জনশক্তি আছে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। সাংগঠনিক যোগ্যতাও আছে। এছাড়া কামরুল ইসলাম কানন, নিখিল চন্দ্র শ্রাবণ রোমান আহমেদ এবং নাজমুল হাসানও সদস্য সচিব প্রার্থী।


ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কলেজগুলোর কমিটি গঠন প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বিবার্তাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ের মাঝেই দেয়ার চেষ্টা করছি। আমরা যাচাই-বাছাই করে যারা ত্যাগী তাদেরকে মুল্যায়িত করবো।


তিনি বলেন, যারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজপথে সরব ছিলেন এবং সংগঠনের ডাকা কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন মূল নেতৃত্বে তাদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হবে।


বিবার্তা/আরকে/বিআর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com