শিরোনাম
ঘুরে আসুন ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেন
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯:২১
ঘুরে আসুন ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সাদা ধবধবে এক বিশালাকার প্রাসাদ। মাঝারি আকারের পুকুরটির ওপাশে কী সুন্দর একটি প্রাসাদ দাঁড়িয়ে আছে আকাশের মেঘ ছুঁয়ে! এক ঝলক দেখলেই যেন প্রাণভরে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয় সেদিকে। এই প্রাসাদের নকশা দেখলেই আপনার মন প্রাণ ভরে যাবে। প্রাসাদটি দেখলে মনে হবে হয়তো নতুন।


তবে জানলে অবাক হবেন, প্রাসাদটির বয়স ৯০ বছর। তবে এখনো এর রূপ নষ্ট হয়নি। যদিও প্রাসাদটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় বলেই এখনও সেটি নতুনের ন্যায়। এই প্রাসাদের নাম রোজ গার্ডেন প্যালেস। প্রতিষ্ঠাকালীন বাড়িটির নাম ‘রোজ গার্ডেন’ হলেও, বিভিন্ন সময়ে নানা নামে পরিচিতি পেয়েছে। কখনও ‘রশিদ মঞ্জিল’, কখনও ‘বেঙ্গল স্টুডিও’ আবার কখনও বাড়িটি পরিচিত ছিল ‘হুমায়ূন সাহেবের বাড়ি’ নামে।


তবে বেশিরভাগ মানুষই এটি হুমায়ূন সাহেবের বাড়ি নামেই চেনেন। বিখ্যাত এই প্রাসাদ ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে সব সময়ই দর্শনার্থীদের ভীড় জমে। রাজধানীবাসীরা ঢাকার মধ্যেই ঘুরে বেড়ানোর মতো জায়গার সন্ধান করেন। তারা চাইলে যেতে পারেন পুরান ঢাকার ঋষিকেশ রোডের রোজ গার্ডেনে। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো কিংবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য আদর্শ এক স্থান হলো এটি।


পশ্চিমমুখী দ্বিতল এ ভবনটি ৪৫ ফুট উঁচু। এই ভবনের আয়তনে প্রায় ৭০০০ বর্গফুট। পুরো ভবনের লতাপাতার কারুকার্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। ৬টি থামের উপর প্রাসাদটি নির্মিত। মূল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ৫টি ঘর আর একটি বড় নাচঘর আছে। নীচতলায় আছে ৮টি ঘর। রোজ গার্ডেন তৈরির সময় বাড়ির সামনে ছিল শানবাঁধানো একটি পুকুর। সেই পুকুরটি আজও বিদ্যমান।


জানা যায়, মোট ২২ বিঘা জায়গো জুড়ে নিনির্মিত হয় রোজ গার্ডেন। তবে এখন আর ২২ বিঘা জায়গা জুড়ে নেই। বাড়িটির চারপাশে বহুতল বেশ কিছু ভবন তৈরি হয়েছে।


উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালে ঋষিকেশ দাস নামক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এই বাগানবাড়ি নির্মাণ করেন। এই ব্যবসায়ী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এনে দুর্লভসব গোলাপ গাছ রোপণ করেন। তখন থেকেই এর নাম হয় ‘রোজ গার্ডেন’৷


১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) গঠনের প্রাথমিক আলোচনা সভা এই বাড়িতেই হয়েছিল। নতুন দল গঠনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে রোজ গার্ডেনে এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল ওই বছরের ২৩ ও ২৪ জুন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর প্রাসাদটিকে সংরক্ষিত ভবন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। ১৯৭০ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘বেঙ্গল স্টুডিও অ্যান্ড মোশন পিকচার্স’ কে লিজ দেওয়া হয় রোজ গার্ডেন। এরপর থেকে বাড়িটি চলচ্চিত্রের ‘শুটিং স্পট’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


যেভাবে যাবেন রোজ গার্ডেনে


সুন্দর এই প্রাসাদটি পুরান ঢাকার টিকাটুলিতে। আরো সহজ করে বললে গোপীবাগের আর.কে মিশন রোডে। গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের কাছ থেকে রিকশায় যেতে পারবেন। রিকশা কিংবা বাইক ছাড়া যাওয়ার উপায় নেই সেভাবে। ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে প্রথমে গুলিস্তান যেতে হবে।


সেখান থেকে হুমায়ূন সাহেবের বাড়ির গেটে পৌঁছাতে রিকশা ভাড়া নিন। রিকশাওয়ালাকে অবশ্যই রোজ গার্ডেন না বলে হুমায়ূন সাহেবের বাড়িতে যাবেন বলবেন। পৌঁছাতে সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট। ভাড়া পড়বে ৫০-৬০ টাকা।


বিবার্তা/এমবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com