শিরোনাম
দেশের সবচেয়ে বড় বিলে গিয়ে যা দেখবেন
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১৭
দেশের সবচেয়ে বড় বিলে গিয়ে যা দেখবেন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চারদিকে বিশাল জলরাশি। এতে ফুটে আছে বাহারি শাপলা। ছোট ছোট নৌকায় শিশুসহ বয়স্কদের কেউ কেউ মাছ ধরছে আবার কেউ শাপলা তুলছে। জলরাশির মধ্যেই কয়েকটি বিশালাকার গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রকৃতির এমন অদ্ভূত সৌন্দর্য দেখে মুহূর্তেই আপনি হারিয়ে যাবেন কল্পনার জগতে।


ঠিক যেনো কল্পনার জগত এটি! তবে কল্পনায় নয়, বাস্তবেই এমন এক স্থান আছে। বলছি আড়িয়াল বিলের কথা। পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদীর মাঝখানে অবস্থিত এই বিলটি। মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি অবভূমি। জানলে অবাক হবেন, এটিই দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল হিসেবে পরিচিত।


এই বিলের বেশিরভাগ অংশই অন্যান্য সময় শুষ্ক থাকে। তবে বর্ষা এলে এর রূপ বদলে যায়। চারপাশে থৈ থৈ করে জলরাশি। ফুটে ওঠে রাশি রাশি শাপলা। আর শীতকালে এটি হয়ে ওঠে বিস্তীর্ণ শস্যক্ষেতে। শীতকালে নানা ধরনের সবজির চাষ করা হয় আড়িয়াল বিলে। দেশের সবচেয়ে বড় জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ হয় এ বিলের মাটিতেই।


ঢাকা থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দক্ষিণে মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত আড়িয়াল বিল। এর আয়তন ১৩৬ বর্গ কিলোমিটার। ধারণা করা হয়, অতীতে এ স্থানে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গমস্থল ছিল। পরে উভয় নদীর প্রবাহে পরিবর্তন ঘটায় স্থানটি শুষ্ক হয়ে বিলে পরিণত হয়।


এ বিলের সৌন্দর্যের টানে পর্যটকরা ভিড় জমান সেখানে। এখনই আড়িয়াল বিল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর বাজার থেকে একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে আড়িয়াল বিলের দিকে।


এ পথে শ্যামসিদ্ধি গ্রাম পেড়িয়ে আরো সামনে গেলে গাদিঘাট। ওই পর্যন্ত পিচঢালা পথ। সেখান থেকে কালভার্ট পেরিয়ে আরো কিছু দূর সামনে এগিয়ে গেলে সড়কের শেষমাথা। আড়িয়াল বিলের শুরু মূলত গাদিঘাট থেকেই।


আড়িয়াল বিলে গেলেই চোখে পড়বে ঢেউহীন এক পানির রাজ্য। জল ও জঙ্গলের দৃশ্য দেখে মুহূর্তেই আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। আরো দেখবেন, পানির মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে শাপলা ফুলের কলি। আর আকাশের মেঘের ভেলায় উড়ে বেড়াচ্ছে পাখির দল।


শ্রীনগর বাজারের চারপাশটা পানিতে ভরপুর আর নদীর দু’ধারে প্রচুর কাশফুল ফুটে থাকে শরতের এ সময়। কালভার্টের নিচ দিয়ে বিলের দিকে ছুটছে খালের পানি। ট্রলারঘাট থেকে ছোট্ট একটা খাল পেরিয়ে মূল বিলে যেতে হয়। আড়িয়াল বিলে শুরুর দিকের পানিটুকু অনেক ঘোলা।


এরপর কিছুদূর যেতেই বিলের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। বিলের পানিতে শুধু শাপলা ফুলই নয় আরও দেখবেন কলমি শাক ও কচুরিপানার সৌন্দর্য। এই বিলের মধ্যে খাল ছাড়াও জলাশয় আছে। এসব জলাশয়ে পানি কমে যাওয়ায় মাছ ধরেন স্থানীয়রা। সেখানে গেলে কৃষকদের মাছ ধরার দৃশ্যই চোখে পড়বে।


আড়িয়াল বিল থেকে ফেরার পথে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন শ্যামসিদ্ধির মঠে। শ্রীনগর বাজারের পশ্চিম দিকে শ্যামসিদ্ধি গ্রামে অবস্থিত প্রাচীন এ মঠ। জানা যায়, ১৮৩৬ সালে বিক্রমপুরের জনৈক ধনাঢ্য ব্যক্তি শম্ভুনাথ মজুমদার এটি নির্মাণ করেন।


প্রায় ২৪১ ফুট উঁচু এ মঠ দিল্লির কুতুব মিনারের চেয়েও ৫ ফুট উঁচু। ধারণা করা হয়, এটিই ভারত উপমহাদেশের সর্বোচ্চ মঠ। এ মঠ দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ২১ ফুট। চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি মঠের দেয়াল বেশ পুরু।


যেভাবে যাবেন আড়িয়াল বিল


রাজধানীর গুলিস্তান থেকে মাওয়াগামী যে কোনো বাসে চড়ে প্রথমে যেতে হবে শ্রীনগরের ভেজবাজার। ভাড়া পড়বে ৫০-৭০ টাকা। সেখানে পৌঁছে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে সোজা যেতে হবে গাদিঘাট। ২৫০-৩৫০ টাকা ভাড়া পড়বে। এরপর পৌঁছে যাবেন আড়িয়াল বিলে। আড়িয়াল বিলে বেড়িয়ে আবার গাদিঘাটে এসে ফেরার জন্য রিকশা পাবেন।


বিবার্তা/বিদ্যুৎ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com