
সেন্টমার্টিন দ্বীপের সৈকতে পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বোতল, চিপস ও অন্যান্য স্ন্যাক্স এর প্যাকেট, পলিথিন, ফেলে দেয়া ছেড়া জাল, বস্তা ইত্যাদি আবর্জনা দিয়ে একটি কোরাল মাছ এবং একটি কচ্ছপের ম্যুরাল তরি করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকাচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদ।
ম্যুরাল দুটি বানাতে সহযোগিতা করেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী । এ গবেষণায় অর্থায়নে আছে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ)।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক, স্থানীয় জেলে ও বাসিন্দারা যেন যত্রতত্র প্লাটিক ও অন্যান্য আবর্জনা না ফেলে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে এই ম্যুরাল দুটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কার্যক্রমের পরিকল্পনাকারী ও প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব।
অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, আমাদের দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপ । প্রতিবছর শীতকালে প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসেন। তাদের অনেকেই জানেন না যে এই দ্বীপের সমুদ্রতলে লুকিয়ে আছে বিচিত্র সব বর্ণিল ও মনোরম সুন্দর সব প্রাণী ও উদ্ভিদ। কিন্তু অপরিকল্পিত পর্যটন, দূষণ, মাছ ও প্রবালের আবাসস্থল ধ্বংস, মাত্রাতিরিক্ত মৎস্য আহরণ, অবৈধভাবে প্রবাল আহরণ ও অবকাঠামো নির্মাণ এবং সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সেন্টমার্টিনের প্রবাল প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র বর্তমানে হুমকির মুখে।
তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণের অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হলো যত্রতত্র প্লাস্টিক ও পলিথিন আবর্জনা, ছেড়া জাল ও নাইলন বস্তা নিক্ষেপ, যা চূড়ান্তভাবে সাগরের পানিতে চলে যায় এবং এর অনেকাংশ পানির নিচে প্রবালের ওপর জমা হয়ে প্রবাল প্রতিবেশ বিনষ্ট করছে। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাঁচানোর উদ্যোগ হিসেবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার ও মেরিন সায়েন্স অনুষদ একটি গবেষণা কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, প্রবাল প্রাচীর সমূহ পৃথিবী নামক আমাদের এই গ্রহে বিদ্যমান প্রতিবেশসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং জটিল। একইসঙ্গে সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। যদিও প্রবাল প্রাচীরগুলি পৃথিবী পৃষ্ঠের মাত্র ১% এরও কম অংশ জুড়ে আছে, তবে এটি ধারণা করা হয় যে সামুদ্রিক প্রজাতির এক-চতুর্থাংশ খাদ্য এবং আশ্রয়ের জন্য প্রবাল প্রতিবেশের উপর নির্ভর করে।
সর্বোপরি এরা মানুষের জীবিকা নির্বাহ, মৎস্য উৎপাদন ও আহরণ, পর্যটন শিল্প, উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল ধারণ করা এই দ্বীপ সেন্টমার্টিন আইল্যান্ড সংলগ্ন প্রবাল প্রতিবেশ এবং এর সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্যকে রক্ষার উদ্যোগ হিসাবে বাংলাদেশ সরকার এটিকে গত ৪ জানুয়ারি ২০২২ সালে সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল বা মেরিন প্রোটেকটেড এরিয়া হিসাবে ঘোষণা করেছে। ইতিপূর্বে ১৯৯৯ সালে এই দ্বীপকে ইকোলজিকেলি ক্রিটিকেল এরিয়া বা প্রতিবেশগতভাবে সংকটপূর্ণ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিলো।
বিবার্তা/তানিম/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]