শিরোনাম
এবার পথশিশুর দায়িত্ব নিলেন শোভা
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২১, ২২:০৬
এবার পথশিশুর দায়িত্ব নিলেন শোভা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কঠোর লকডাউনের মাঝেও হতদরিদ্রদের জন্য নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তানিয়া হক শোভা। করোনার এই সঙ্কটে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে প্রশংসিত হওয়া অদম্য এই নারী এবার এক পথশিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে যাবতীয় দায়িত্বও নিয়েছেন।


জানা যায়, ২০১৮ সালে রাজধানীর ধানমন্ডির লেক পার্কে ঘুরতে গিয়ে অসহায় এক পথশিশুর অবস্থা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শোভা। এদিন তারা পার্কে হাঁটা শেষ করে ১০/১৫ জন একত্রে ডাব খাইতেছিলাম একসাথে। ঐ পথশিশু তাদের দিকে তাকিয়ে থাকলেও কিছু বলতে পারছিলেন না। এসময় শোভার নজরে পড়ে ঐ পথশিশুটি। সাথে সাথে দেরী না করে নিজে পথশিশুর জন্য ডাব কিনে নিয়ে গেলেন। কিন্তু ছোট্ট শিশু ডাব ধরে খেতেও পারছিলেন না। বিষয়টি দেখে নিজ হাতে শিশুকে ডাব খাইয়ে দেন শোভা।


অসহায় ওই শিশুকে ডাব খাইয়ে থেমে থাকেননি তিনি। শিশুর মাকে খোঁজে বের করে শিশুর সার্বিক খোঁজ -খবরও নেন। মায়ের মুখে শিশুর পারিবারিক শোচনীয় অবস্থার কথা জেনে বিবেকের দায়বধ্যতা থেকে বসে থাকতে পারেননি। এই বাচ্চার সব খরচের দায়িত্বও নেন তিনি। এ ঘটনার পর থেকে গত ৩ বছর অসহায় ওই শিশুর পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন শোভা।



ঘটনার দিন উপস্থিত জিম রহমান বিবার্তাকে বলেন, প্রিয় নেত্রী ও অভিভাবক তানিয়া হক শোভার সাথে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। এদিন ধানমন্ডির লেক পার্কে ঘুরতে গিয়ে অসহায় পথশিশুর অবস্থা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন শোভা। এরপর এই শিশু পরিবারের খোঁজ -খবরসহ সার্বিক সহযোগিতায় সবসময় পাশে ছিলেন তিনি।


কিছু মানুষ তার জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই মানুষের জন্য করতে চায়। প্রিয় নেত্রী শোভা এমনই একজন। তিনি সবসময় মানুষ মানুষের জন্য ভাবেন। কাজেই আমাদের যার যার অবস্থান থেকে অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে হবে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে তানিয়া হক শোভা বিবার্তাকে বলেন, সেদিন খুব ছোট আড়াই বছরের বাচ্চা, যে ডাব খেতে চাইলেও কিছু বলতে পারতেছিল না। এরপর বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হওয়ায় আমি ডাব নিয়ে তার কাছে গেলাম। তারপর বাচ্চাকে নিজে ধরে ডাব খাওয়ালাম। শিশুটির সেইদিনের খুশি দেখে আমিও কি যে তৃপ্তি পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। এরপর থেকেই বাচ্চাটার মার সাথে কথা বলে তার পরিবারকে সহায়তা করে যাচ্ছি।


তিনি বলেন, পথশিশুদের- অসহায়দের জন্য অনেক কিছু করার সামর্থ্য হয়তো আমার নেই। তারপরও ডাল-ভাত খেয়ে ভালো আছি। তাছাড়া ছোট বেলা থেকেই আমি একজন মানবিক মানুষ। অন্যের কষ্ট সহ্য হতো না। আর আল্লাহ আমাকে অনেক ভালো রেখেছেন। তাই আমি আমার অবস্থান থেকে আশ-পাশের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই।


উল্লেখ্য, শুধু পথশিশুর পাশে নয়, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হতদরিদ্রদের জন্য নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন শোভা। কখনো প্রতিবন্ধি রিকশাওয়ালার পাশে দাঁড়িয়েছেন, কখনো নিজে খাবার রান্না করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করছেন। আবার কখনো কারো চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছেন। নিজ কর্মচারীর মৃত্যু হলে কোভিড আতঙ্কে কেউ কাছে না এলেও তিনি নির্ভীকচিত্তে সবকিছুর ব্যবস্থা করে মানবসেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।


শিক্ষা বিস্তারেও অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন অদম্য এই নারী। নিজের জেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে অসহায় শিক্ষার্থীদের হাফেজি পড়াচ্ছেন। এখানেই শেষ নয়, চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে খাদ্য সহায়তা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। গত ৩১ জুলাই রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এতিমখানা থেকে এ কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। শুরুর দিনে ১ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেন। রাজধানীর প্রতিটি অলি-গলিতে ধারাবাহিকভাবে চলছে তার এ কার্যক্রম।


করোনার এই কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া এ মানবহিতৈষী নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্ততু থেমে যাননি। সুস্থ হয়ে ফের মাঠে নেমে অসহায় জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।


বিবার্তা/রাসেল/শাহিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com