ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর রিমান্ড শুনানিতে অন্য আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন আমির হোসেন আমুর আইনজীবী। অভিযোগ জানিয়ে পিটুনির শিকার ওই আইনজীবী বলেছেন, আমি এর বিচার চাই।
৭ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন রিমান্ড শুনানিতে আমুর রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। এ সময় তার বক্তব্যটি রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেন আসামি আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী। তখন উত্তেজিত হয়ে আদালতে উপস্থিত অন্য আইনজীবীরা তাকে মারধর শুরু করেন। মারধরের ঘটনায় তিনি আদালতের দরজার সামনে পড়ে গেলে তাকে লাথি মারা হয়। এরপর কয়েকজন আইনজীবী স্বপন রায়কে তুলে আদালত থেকে বের করে দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী বলেন, আদালতে শুনানি চলাকালে আমাকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত কোনো ব্যবস্থা নেননি। এখানে কোনো ন্যায়বিচার নেই। আমি এর বিচার চাই।
এর আগে রিমান্ড শুনানিতে আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, শেখ হাসিনার বাপকে বিপথে নিয়েছিলেন আমু। সেই ভাবেই শেখ হাসিনাকে বিপথে নিয়ে গেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমু ১৪ দল নিয়ে মিটিং করেন। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যেকোনো মূল্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে হবে। তারা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই বাংলাদেশে কোনো শেখ হাসিনা বা ফ্যাসিস্ট আর তৈরি না হোক। আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। তাদের বিচার হলে এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট দল আসবে না।
আইনজীবীদের হট্টগোলের পর তাদের উদ্দেশ্যে আমির হোসেন আমু বলেন, আইনজীবীরা ভাই ভাই, মিলেমিশে থাকা উচিত। এখনকার পরিবেশ কিন্তু সবসময় থাকবে না। এ সময় ফের উত্তেজিত হয়ে ওঠেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। পরে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে, বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, আমির হোসেন আমু ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ২০১৩ সালে তিনি ভূমি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আমির হোসেন আমু।
বিবার্তা/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]