
কোটা বিরোধী আন্দোলন ও সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
১৭ জুলাই, বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছাড়া শুরু করেছেন। হলের সামনে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, চলমান কোটা ইস্যু নিয়ে গতকাল সারাদেশে ছয়জন নিহতের খবরে জীবনের অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। বাড়ি থেকে অভিভাবকরা বারবার ফোন করে হল ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলছেন। তাই আবাসিক হল ছেড়ে বাড়ি অথবা নিকটাত্মীয়ের বাসায় উঠবেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান বলেন, আপাতত ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছি। দু’একদিনের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাসে আসবো। না হলে বাড়ি চলে যাবো। বাবা-মা বাসা থেকে ফোন দিচ্ছে। তারাও আতঙ্কগ্রস্ত।
ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী বলেন, "বাড়ি যাচ্ছি, এত ঝামেলার মধ্যে থাকা ঠিক হবে না। ক্যাম্পাস ও আশপাশের অবস্থা কখন কী হয় বলা যাচ্ছে না। নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে ভোরেই বের হয়েছি।"
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মঙ্গলবার সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ায় গতকাল দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে বলে বলা হয়।
ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় দেশের সব পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অন্যান্য কলেজসহ সব কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে নিরাপদ আবাসস্থলে অবস্থানের নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেয়। ঢাবি বন্ধ হবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধন্ত নিতে গতরাতে প্রভোস্ট কমিটির জরুরি সভা হয়।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হবে। এরপরই সিদ্ধান্ত জানাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নিহতদের স্মরণে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে পড়ানো হবে গায়েবানা জানাজা। এরপর কফিন মিছিল করবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]