
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিলের দাবি উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন।
২৬ জুন, বুধবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে বার্ষিক অধিবেশনে এ দাবি তোলা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) প্রোগ্রাম থেকে ২০১৯ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছিলেন বেনজীর আহমেদ। গত ১৪ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতাই ছিল না, তবু ডক্টরেট ডিগ্রি পান বেনজীর’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধীন ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য তৎকালীন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদকে নিয়ম শিথিল করে বিশেষ বিবেচনায় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীন ডিবিএ প্রোগ্রামে ভর্তির অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল।
এদিকে বুধবার পৌনে ৮টার দিকে প্রথমে বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বাজেট অধিবেশনে উপর আলোচনায় এই ডিগ্রি বাতিলের প্রস্তাব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রঞ্জিত কুমার সাহা।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদ ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) প্রোগ্রাম থেকে। সেখানে ভর্তির জন্য স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়।শিক্ষাজীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। বেনজীরের তা ছিল না। শর্ত শিথিল করে তাকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বেনজীর আহমেদ ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নেন। এরপর থেকে নিজের নামের আগে 'ডক্টর' শব্দটি যুক্ত করেন। যদিও ডিগ্রিটি নেওয়ার প্রোগ্রামে ভর্তির যোগ্যতাই ছিল না তার। শর্ত শিথিল করে তাকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া তার অভিসন্দর্ভটি ডক্টরেট ডিগ্রির সমমানের ছিল না।
এসব কথা উল্লেখ করে বেনজির আহমেদকে দেওয়া ডিগ্রি বাতিলের প্রস্তাব করেন রঞ্জিত কুমার সাহা।
পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক সংকট সাদা দলের সাবেক আহবায়ক ও সিনেট সদস্য এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম রঞ্জিত কুমার সাহার বক্তব্যের সমর্থন জানিয়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ডিগ্রি বাতিল করার প্রস্তাব জানান।
তিনি বলেন, উনার (বেনজীর আহমেদ) কাছে কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কি দায়বদ্ধতা আছে যে তার জন্য পিএইচডি ডিগ্রির ভর্তির যোগ্যতা কমাতে হবে–উনাকে কেন সুবিধা দিতে হবে?
তিনি আরও বলেন, আপনার (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য) কাছে বেনজিরের ডিগ্রি বাতিল করার জন্য অনুরোধ করছি। সিনেটে প্রস্তাব পাস হোক এ ধরনের লোকের ডিগ্রি বাতিল হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বেনজীর আহমেদের ডিগ্রি গ্রহণে অনিয়মের তথ্য উঠে আসে। সেখানে দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতাই ছিল না। ভর্তির জন্য স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়, শিক্ষাজীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। বেনজীরের তা ছিল না, তবু ডক্টরেট ডিগ্রি পান তিনি।
বেনজীরের ভর্তির ক্ষেত্রে মৌলিক শর্তগুলো শিথিল করা হয়েছিল ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সুপারিশে। তিনি ছিলেন বেনজীরের ‘ডক্টরেট’ প্রোগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]