অতি বাম ও অতি ডান মিলে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চলছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৪৪
অতি বাম ও অতি ডান মিলে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চলছে: প্রধানমন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

অতি বাম ও অতি ডান মিলে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক দেউলিয়া, যারা একেবারেই রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া- এদের কিছু বক্তব্য; আর আমাদের দেশের কিছু আছে বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন, সেই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা অনবরত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গীবত গাচ্ছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে এদেশের অতি বাম, অতি ডান সবই এখন এক হয়ে গেছে। এটা কিভাবে হলো আমি জানি না। এই দুই মেরু এক হয়েও সারাক্ষণ শুনি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে হবে।


৩০ এপ্রিল, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে ইতোমধ্যেই ১৫০০ কোটি টাকা টোল উঠেছে। বাংলাদেশ যে পারে এটাই তার প্রমাণ। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অগ্রযাত্রাটা আমরা করতে পারবো। একটা দল যাদের কোন মাথামুন্ডু নেই। যাদের জন্মই সামরিক আমলে তারা আবার ভোট নিয়ে প্রশ্ন তোলে।


মানুষ আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা রেখেছে। জনগণের আস্থা বিশ্বাস একমাত্র শক্তি বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।


শেখ হাসিনা বলেন, এখন কার যে কী আদর্শ, কে যে কতটুকু বিচ্যুত হলো, সেটাই প্রশ্ন। অতি বামদের আদর্শ নেই, তারা বলে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। আমাদের অপরাধটা কী? তবে ভোট চুরি করলে এ দেশের মানুষ মেনে নেয় না। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে তাদের সচেতন করেছি।


সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের মানুষের দিন বদল হয়েছে। দারিদ্র্যের হার এখন গ্রামে নয় শহরে দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়া যাবে।


শেখ হাসিনা বলেন, মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়েছি, শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছি। স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়েছি। মানুষের আয়ুস্কাল বৃদ্ধি করেছি। মানুষের ঘরের কাছে চিকিৎসাসেবা নিয়ে গেছি। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি আছে। সব দিক থেকেই তো বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পিছিয়ে আছি কোথায় আমরা? মাথাপিছু আয় আমরা বৃদ্ধি করেছি, প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করেছি।


তিনি বলেন, সব সময় আমরা লক্ষ্য রেখেছি তৃণমূলের মানুষ, তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা। আজ কেউ বলতে পারছে না যে গ্রামে দারিদ্য আছে। এখন বলে- শহরে দারিদ্র্য। এখন অদ্ভুত এক হিসাব হয়ে গেছে, দারিদ্রের হার শহরে বেড়ে গেছে, গ্রামে না। অথচ এক সময় গ্রামের মানুষ একবেলা ভাত খেতে পেতো না। মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। রোগের চিকিৎসা পেতো না। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। আমাদের উন্নয়নে তৃণমূল মানুষের দিকে লক্ষ্য রেখে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলা-উপজেলা গৃহহীন, ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা দিয়েছি। অল্প কিছু বাকি আছে, সেগুলোও শিগগিরই হয়ে যাবে। বাংলাদেশের কোনও মানুষই ঠিকানাবিহীন থাকবে না।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার অতিমারি। এরপর আসে ইউক্রেন যুদ্ধ। স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন। সারা বিশ্বব্যাপী মূদ্রাস্ফীতি। এসব সমস্যার কারণেই কিন্তু আমরা নয়, সারা পৃথিবী, এমনকি উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। তারপরও আমরা আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছি। ২০০৮ সালর নির্বাচনি ইশতেহারে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা এক ধাপ ওপরে তুলবো। রূপকল্প ২০২১ আমরা ঘোষণা দেই, দিন বদলের সনদ আমরা ঘোষণা দেই। আজ দিন বদল ঘটেছে।


তিনি বলেন, করোনার সময় আমরা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। পৃথিবীর ধনী দেশগুলো দেয়নি, কিন্তু বাংলাদেশ দিয়েছে। টেস্ট আমরা বিনা পয়সায় করেছি, কোনও ধনী দেশও করেনি। আমরা দুই হাতে পানির মতো টাকা খরচ করে মানুষকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নিয়েছি। খুব কম দেশই সেটা করতে পেরেছে। আমরা সেখানে সাফল্য অর্জন করেছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


তিনি আরও বলেন, সব দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে, পিছিয়ে আছি কোথায় আমরা? আমেরিকায় যেভাবে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে নির্যাতন করলো, তারা এখন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে! নির্যাতন করে তারা মানবাধিকারের কথা বলে। আমি এসবের জবাব চাই।


আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় না দেখে, মানবাধিকার নিয়ে সবক দেয় বাংলাদেশকে। মার্কিন কোনো পুলিশের গায়ে কোনো রাজনৈতিক দল হাত তুললে, কী করতো সেখানকার পুলিশ? কদিন আগে যুদ্ধের বিরোধিতা করায় সাধারণ মানুষের আন্দোলনে কি জুলুমটাই না করলো আমেরিকার পুলিশ! যেভাবে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে নির্যাতন করলো, তারা এখন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে! এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর জবাব কী?


প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে গরম পড়েছে সকলেই সাবধানে থাকবেন। জীবন জীবিকা চলবে তাও সাবধানে থাকতে হবে। পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় গরম ছড়িয়ে পড়ছে। শিগগিরই বৃষ্টি হবে বলে আশা করছি। পহেলা আষাঢ় থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপন শুরু করবো।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com